বাণিজ্যিক ব্যাংক কি? (What is Commercial Bank?)

বাণিজ্যিক ব্যাংক (Commercial Bank) এক ধরণের আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা জনসাধারণ, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং কলকারখানার মালিকদের নিকট থেকে আমানত সংগ্রহ করে অন্যান্য জনসাধারণ, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং কলকারখানার মালিকদের ব্যবসা করার জন্য সরল সুদে ঋণ বিতরণ এবং লাভের জন্য ব্যবসা হিসাবে পরিচালিত মৌলিক বিনিয়োগের পণ্য সরবরাহ করার মতো পরিষেবা প্রদান করে।

অর্থাৎ, যে ব্যাংক আমানত সংগ্রহ করে এবং অধিক মুনাফা লাভের জন্য বিভিন্ন জায়গায় আমানত বিনিয়োগ করে সেই ব্যাংকগুলোকে বাণিজ্যিক ব্যাংক (Commercial Bank) বলে।

প্রফেসসর রোজার বলেছে, “যে ব্যাংক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে অর্থ অর্থের মূল্যে নিরূপণযোগ্য লেনদেন করে তাকে বাণিজ্যিক ব্যাংক (Commercial Bank) বলে

প্রতিটি দেশের জন্য Commercial Bank একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। Commercial Bank দেশে বিনিয়োগের মাধ্যম তৈরি করে। প্রতিটি দেশে বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম।

একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক হলো

  • একটি মাধ্যমিক আর্থিক কারবারি প্রতিষ্ঠান যা দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে মধ্যস্থতায় সহায়তা করে।
  • Commercial Bank একটি দেশের অর্থনীতির জীবনীশক্তি হিসাবে পরিগণিত হয়।
  • এই ব্যাংক অর্থ ও আর্থিক কার্যাবলীর লেনদেন করে বিনিয়োগের মাধ্যম তৈরি করে।
  • Commercial Bank জনসাধারণের কাছ থেকে অর্জিত সঞ্চয় সংগ্রহের মাধ্যমে মূলধন গঠন করে এবং পরবর্তীতে সেই মূলধন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে থাকে।
  • জনসাধারণের গচ্ছিত আমানত যেকোন প্রয়োজনে উত্তোলনের সুযোগ দিয়ে থাকে।
  • বিভিন্ন আর্থিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করে।

বাণিজ্যিক ব্যাংক (Commercial Bank) কত প্রকার কি কি?

বাণিজ্যিক ব্যাংক কত প্রকার

বাণিজ্যিক ব্যাংক কত প্রকার

বাণিজ্যিক ব্যাংককে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক।

রাষ্ট্রয়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক (State-Owned Commercial Bank)

রাষ্ট্রয়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের শতভাগ অথবা প্রায় শতভাগ মালিকানা ঐ দেশের সরকারের। এই ব্যাংকগুলো সবগুলোই তফসিলিভুক্ত সরকারি ব্যাংক। বাংলাদেশে ৬টি রাষ্ট্রয়াত্ত Commercial Bank রয়েছে – সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, বেসিক ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক (Private Commercial Bank)

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের বেশিরভাগ বা সমস্ত শেয়ার বা মালিকানা থাকে ব্যক্তি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে। বাংলাদেশে ৪৩টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সবগুলোই তফসিলিভুক্ত বেসরকারি ব্যাংক। এদের মধ্যে ৩৩টি ব্যাংক প্রথাগত বা সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রম করে থাকে।

বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক (Foreign Commercial Bank)

এক দেশের Commercial Bank বিভিন্ন দেশে আঞ্চলিক কার্যালয় ও শাখা কার্যালয় খুলে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করলে সেই সব দেশে ঐ ব্যাংকগুলিকে বিদেশি Commercial Bank বলা হয়। বাংলাদেশে কয়েকটি বিদেশি Commercial Bank রয়েছে। এসকল ব্যাংক মূলত বাণিজ্য করার জন্য এদেশে এসেছে। নিচের ছকে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের তালিকা প্রদান করা হলো –

সিটিব্যাংক এনএ

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ
এইচএসবিসি

ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান

উরি ব্যাংক

ভারতীয় স্টেট ব্যাংক
হাবিব ব্যাংক লিমিটেড

ব্যাংক আলফালাহ্

কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন

 

বাণিজ্যিক ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য

Commercial Bank মূলত গঠিত হয় বিনিয়োগ সৃষ্টির উদ্দেশ্য।

ব্যাংককে একটি দেশের অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে গণ্য় করা হয়। Commercial Bank গুলো পরিচালনা করা হয় আমানত সংগ্রহ করে তা অধিক মুনাফা লাভের আশায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরল সুদে ঋণ প্রদানের জন্য।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের যেসব বৈশিষ্ট্য তাকে অন্য ব্যাংকগুলো থেকে আলাদা করে সেগুলি নিচে আলোচনা করা হলো।

  • গঠনঃ সকল Commercial Bank দেশের একটি আইনের আওতায় গঠন করা হয় এবং সকল প্রকারের ব্যাংকিং কার্যাবলি ঐ আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
  • তালিকাভুক্ত ব্যাংকঃ যে সকল ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত ও নির্দেশনা মেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদস্যভুক্ত হয় সে সকল ব্যাংক তালিকাভুক্ত ব্যাংক হিসেবে গণ্য হয়। বাংলাদেশের Commercial Bank গুলি তালিকাভুক্ত ব্যাংক। Commercial Bank গুলি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
  • শাখা ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনাঃ অনেক দেশের Commercial Bank কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শাখা ব্যাংকের ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • মালিকানাঃ মূলত Commercial Bank ব্যক্তিগত মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, তবে সরকারি ও বেসরকারি উভয় অথবা যৌথমালিকানায় Commercial Bank গঠিত ও পরিচালিত হতে পারে।
  • বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টিঃ অর্থ ছাড়া বিনিময়ের অন্যান্য সহজ মাধ্যম সৃষ্টি করা বাণিজ্যিক ব্যাংকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যেমন চেক, ব্যাংক ড্রাফট, বিনিময় বিল, পে-অর্ডার, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, প্রত্যয়পত্র ইত্যাদি।
  • আমানত গ্রহণ ঋণদানঃ একপক্ষ নিজের অর্জিত অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমানত হিসেবে গচ্ছিত রাখে। অন্যদিকে, ব্যাংক সেই আমানত মুনাফা অর্জনের জন্য অপরপক্ষকে সরল সুদে ঋণ প্রদান করে।
  • মুনাফা অর্জনঃ জনসাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাংকে মুনাফা অর্জনের জন্য তাদের আমানত জমা রাখে। মূলত সকল Commercial Bank মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে গঠিত ও পরিচালিত হয়। মুনাফা অর্জন মূল উদ্দেশ্য হলেও Commercial Bank পরোক্ষভাবে জনকল্যাণ করে থাকে।
  • ঋণ আমানত সৃষ্টিঃ বিশেষ প্রক্রিয়ায় আমানত সৃষ্টি করা হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। Commercial Bank নগদে ঋণ না দিয়ে ঋণগ্রহীতার আমানত হিসেবে স্থানান্তর পূর্বক উক্ত আমানত থেকে নতুন ঋণের সৃষ্টি করে।
  • সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানঃ মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি জনকল্যাণ বা সেবামূলক কাজ করাই হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকের আসল উদ্দেশ্য। ব্যাংকগুলি গ্রাহকদের জন্য নিত্যনতুন বিভিন্ন সেবা প্রদান করে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাজ কি?

Commercial Bank আমানত গ্রহণ করে এবং সরল সুদে সেই অর্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করে দেশের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বজায় রাখে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য শুধু ঋণ প্রদান করা নয়, ঋণ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন সেবামূলক কাজেও অংশগ্রহণ করা।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলিকে মূলত তিনভাগে বিভক্ত করা যায় – সাধারণ কার্যাবলি, সেবামূলক কার্যাবলি এবং প্রতিনিধিত্বমূলক কার্যাবলি।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলি

বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলি

বাণিজ্যিক ব্যাংকের সাধারণ কার্যাবলি

  • আমানত গ্রহণঃ বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কাজ হচ্ছে সাধারণ জনগণের গচ্ছিত আমানত সঞ্চয় হিসেবে গ্রহণ করা। মুনাফার উদ্দেশ্যে সেই আমানত দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সহজ সুদে ঋণ প্রদান করে থাকে। মূলত, একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে দুই ধরণের সঞ্চয় প্রচলিত আছে – স্থায়ী ও অস্থায়ী সঞ্চয়। ব্যাংক চলতি হিসাবে কোনো সুদ প্রদান করে না। স্থায়ী সঞ্চয়ের বিপরীতে ব্যাংক সবচেয়ে বেশি মুনাফা ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করে থাকে।
  • অর্থ উত্তোলনের সুযোগঃ Commercial Bank আমানতকারীদের বিভিন্ন মেয়াদে গচ্ছিত অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দিয়ে থাকে। তাছাড়া, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক কার্ড যেমন- ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদির মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয়ে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ প্রদান করে। এজন্য প্রতিটি গ্রাহককে চলতি হিসাব নামের একটি ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে হয়। চলতি হিসাবের মাধ্যমে একজন গ্রাহক দৈনিক যতবার প্রয়োজন অর্থ উত্তোলনের সুযোগ পান।

অপরদিকে, সঞ্চয়ী হিসাবে একজন গ্রাহকের সপ্তাহে নিয়ম অনুযায়ী সীমিত সংখ্যকবার অর্থ উত্তোলনের সুযোগ থাকে।

আবার স্থায়ী হিসাবের একাউন্ট চালু করলে গ্রাহকদের গচ্ছিত অর্থ উত্তোলন করতে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।

বর্তমানে অধিকাংশ Commercial Bank গ্রাহকদেরকে এটিএম বুথের সহায়তায় ২৪ ঘণ্টা অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দিচ্ছে।

  • ঋণ প্রদানঃ Commercial Bank বিভিন্ন গ্রাহক, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদেরকে নির্দিষ্ট সুদ বা মুনাফার বিনিময়ে বিভিন্ন মেয়াদে অর্থ ঋণ দিয়ে থাকে।
  • বিনিয়োগঃ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মুনাফা বা সুদ অর্জনের একটি রাস্তা হচ্ছে বিনিয়োগ। ব্যাংকগুলি ঋণ প্রদানের পাশাপাশি প্রয়োজনে বিভিন্ন লাভজনক খাতে অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে। ব্যাংক সরকারি ও বেসরকারি শেয়ার, বন্ড এবং অন্যান্য সিকিউরিটি ক্রয় করে বিনিয়োগে অংশগ্রহণ করে।
  • ঋণ আমানত সৃষ্টিঃ প্রতিটি Commercial Bank তাদের গ্রাহকদেরকে ঋণ প্রদান করার পাশাপাশি গ্রাহকদের ঋণ আমানত হিসেবে সৃষ্টি করে। ঋণ আমানত সৃষ্টির জন্য গ্রাহকরা ব্যাংকে একটি একাউন্ট খোলে। যখন গ্রাহক ঋণ নেন ব্যাংক তখন ঋণের টাকা উক্ত একাউন্টে ট্রান্সফার করে দেয়। ঋণ করা টাকার জমা হিসেব রাখার জন্য তাদেরকে চেক বই সরবরাহ করা হয়। এরপর উক্ত ঋণ গ্রহীতা সেই চেক দিয়ে প্রয়োজন অনুসারে টাকা উত্তোলন করতে পারেন। এভাবেই মূলত একটি ব্যাংক ঋণ আমানত তৈরি করে থাকে।
  • বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টিঃ বাংলাদেশের বিনিময়ের মাধ্যম হচ্ছে টাকা, কিন্তু Commercial Bank গুলো আর্থিক লেনদেন করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের চেক বই প্রদান করে ফলে বিনিময়ের মাধ্যম আরোও সহজ ও নিরাপদ হয়। তাছাড়া, Commercial Bank চেক, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার, বিনিময় বিল, প্রত্যয়নপত্র, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি দ্বারাও বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে।
  • মূলধন গঠনঃ মূলধন গঠন প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সকল Commercial Bank জনগণের ছোট ছোট সঞ্চয়কে একত্রিত করে বড় মূলধন গঠনে সহায়তা করে। তারপর সেই মূলধন আবার শিল্প ও বাবসায়-বাণিজ্যে অর্থসংস্থানের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে। এভাবে সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে বড় ভূমিকা পালন করে।
  • বিল বাট্টাকরণঃ ব্যবসায়ীদেরকে বিনিময় বিল মেয়াদপূর্তির আগেই প্রয়োজন অনুসারে তাদের বাট্টায় ভাঙানোর সুযোগ দেয়া বাণিজ্যিক ব্যাংকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এর ফলে ব্যবসায়ীরা স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের প্রয়োজন দ্রুত মেটাতে পারে। সাথে সাথে ব্যাংক বাটা প্রাপ্তির মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করে।
  • কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সহায়তা দানঃ তফসিলিভুক্ত সকল Commercial Bank প্রত্যক্ষভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে চলার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে।
  • অভ্যন্তরীণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অর্থায়ন (Financing domestic & foreign trade): Commercial Bank অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিনিময় বিল বাট্টাকরণ, স্বল্পমেয়াদি ঋণ মঞ্জুর, প্রত্যয়পত্র ইস্যু, ব্যাংকের স্বীকৃতিপত্র ইস্যু প্রভৃতির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের সেবামূলক কার্যাবলি

বাণিজ্যিক ব্যাংকের সাধারণ কার্যাবলির পাশাপাশি বিভিন্ন সেবা ও জনকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করে থাকে। যা দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রের জন্য খুব উপকারী।

  • অর্থ স্থানান্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাংকের সেবামূলক কার্যাবলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে অর্থ স্থানান্তর। ব্যাংকের গ্রাহকরা যাতে খুব সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অর্থ স্থানান্তর করতে পারে সে জন্য Commercial Bank গুলি দেশে-বিদেশে শাখা স্থাপন করেছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকারের অনলাইন সেবা চালু রয়েছে ফলে গ্রাহকরা খুব সহজেই টাকা দেশ থেকে বিদেশে স্থানান্তর করার সুযোগ পেয়েছে। এছাড়াও অর্থ স্থানান্তরের জন্য বিভিন্ন প্রকারে দলিল ইস্যু করে রেখেছে যেমন- চেক, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার, ভ্রমণকারী চেক ইত্যাদি।
  • তথ্য সরবরাহঃ Commercial Bank গ্রাহক তথা ব্যবসায়ীদেরকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকারের ব্যবসায়িক তথ্য প্রদান করে থাকে। এসব ব্যবসায়িক তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে গ্রাহক কার্যকর ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
  • পরামর্শ প্রদানঃ Commercial Bank গ্রাহকদেরকে অনেক বেশি মূল্যায়ন করে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়, আয়কর ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত এবং আরোও বিভিন্ন প্রকারের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে থাকে। ব্যাংকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করে অনেক বড় বড় শিল্পপতি ও কারখানার মালিকগণ তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারেন।
  • আধুনিক প্রযুক্তিগত সেবা প্রদানঃ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য প্রত্যকটি Commercial Bank গ্রাহকদেরকে আধুনিক প্রযুক্তিগত বিভিন্ন প্রকারের সেবা প্রদান করে থাকে। আধুনিক প্রযুক্তিগত সেবার মধ্য রয়েছে অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, এটিএম বুথ ইত্যাদি।
  • আর্থিক সচ্ছলতার সনদ প্রদানঃ সকল Commercial Bank আর্থিকভাবে সফল গ্রাহককে বিভিন্ন প্রয়োজনে আর্থিক সচ্ছলতার সনদ প্রদান করে। যেমন – বিদেশগামী ব্যবসায়ীদের, ছাত্র-ছাত্রীদের বিদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে, বিদেশে ভ্রমণ পিয়াসু গ্রাহকদেরকে এই সুবিধা দিয়ে থাকে।
  • অর্থ সম্পদের নিরাপত্তা বা লকার সুবিধা প্রদানঃ Commercial Bank জনগণের মূল্যবান কাগজপত্র, স্বর্ণ, রৌপ্য, অলংকার ও বিভিন্ন প্রকারের দলিল ইত্যাদি জমা রাখে। ফলে জনগণের অর্থ ও সম্পদের নিরাপত্তা বাড়ে। এই সেবা প্রদান করার বিপরীতে Commercial Bank অবশ্য সার্ভিস চার্জ গ্রহণ করে থাকে।
  • প্রত্যয়নপত্র ইস্যু (Issuance of Letter of credit): Commercial Bank ধারে ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বিশেষত বৈদেশিক বাণিজ্যে বিক্রেতাকে (রপ্তানিকারক) গ্রাহকের (আমদানিকারক) পক্ষে মূল্য পরিশোধের নিশ্চয়তা প্রদান করে। এর ফলে দেশীয় এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারিত হয়।
  • উপহার চেক (Gift cheque): বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে উপহার প্রদানের জন্য Commercial Bank উপহার চেক ইস্যু করে।
  • বিলে স্বীকৃতি প্রদান (Accepting bill of exchange): গ্রাহকের পক্ষে Commercial Bank বিলে স্বীকৃতি প্রদান করে। বিলে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংক গ্রাহককে দেশের মধ্যে ধারে পণ্য ক্রয় ও বিদেশ হতে পণ্য আমদানিতে সহায়তা প্রদান করে।
  • মার্চেন্ট ব্যাংকের সুবিধা প্রদান (Providing services as a merchant bank): বর্তমানে অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংকের আলাদা মার্চেন্ট ব্যাংকিং বিভাগ রয়েছে। যার মাধ্যমে Commercial Bank মার্চেন্ট ব্যাংকের সুবিধা (শেয়ার এবং ঋণপত্র ইস্যু ও অবলেখন) প্রদান করে।
  • মধ্যস্থতাকারী হিসেবে (Acting as a referee): Commercial Bank তার সুনাম ও আস্থা ব্যবহার করে অনেক সময় দেনাদার ও পাওনাদারের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রতিনিধিত্বমূলক কার্যাবলি

অনেক সময় Commercial Bank গ্রাহকদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে। ফলে গ্রাহকদের দ্বারা যেসকল কাজ করা সম্ভব নয় সেসব কাজ সম্পাদন করে মুনাফা অর্জন করে এবং গ্রাহকদের সেবা প্রদান করে থাকে।

  • অর্থ আদায় পরিশোধঃ বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন করার সময়  Commercial Bank গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে ব্যাংক সৃষ্ট দলিল যেমন – পে-অর্ডার, ক্রসড চেক, ব্যাংক ড্রাফট ইত্যাদি অধিক ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে Commercial Bank গ্রাহকদের পক্ষ হয়ে উক্ত দলিলে উল্লেখিত নির্দেশনা অনুযায়ী টাকা লেনদেন সম্পন্ন করে থাকে। Commercial Bank গ্রাহকদের নির্দেশে বিভিন্ন খাতে টাকা পরিশোধের মাধ্যমে বিভিন্ন অবস্থায় গ্রাহকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকে।
  • বৈদেশিক বাণিজ্যে সহায়তাঃ বৈদেশিক বাণিজ্য করার সময় Commercial Bank ব্যবসায়ীদের পক্ষে প্রত্যয়পত্র বা Letter of Credit ইস্যু করে এবং বিনিময় বিলে স্বীকৃতি দিয়ে ব্যবসায়ীদেরকে আর্থিকভাবে সহায়ত করে থাকে।
  • সিকিউরিটিজ ক্রয়বিক্রয়ঃ বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে Commercial Bank বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার, ডিবেঞ্চার, ঋণপত্র ইত্যাদি সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় করে। এছাড়া এই ব্যাংকগুলি সরকারি বন্ড, সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে। এক্ষেত্রে বাCommercial Bank সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় করে প্রতিনিধিত্বমূলক কাজ করে থাকে।
  • অবলেখক হিসেবে কাজঃ বিনিয়োগ ব্যাংকের মতো Commercial Bank অবলেখকের কাজ করে থাকে। Commercial Bank কোনো নতুন কোম্পানির শেয়ার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অবলেখকের কাজ করার পাশাপাশি পুরাতন কোম্পানির শেয়ার বিক্রয়ের দায়িত্ব নিয়ে থাকে। এর জন্য ব্যাংক একটা নির্দিষ্ট হারে ফি নিয়ে থাকে। এই কমিশনকে অবলেখন ফি বলে।  অবলেখক হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংক শেয়ার, ঋণপত্র, বন্ড, রাইট শেয়ার প্রভৃতি আর্থিক সম্পদ ইস্যুর মাধ্যমে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহকে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে Commercial Bank আর্থিক সম্পদের পরিমাণ ও মূল্য নির্ধারণ করে, বিক্রয় পদ্ধতি নির্ধারণ করে এবং অন্যান্য ঝুঁকি বহন করে। ব্যাংকসমূহ বাণিজ্যিক কোম্পানি, সরকার এবং মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের সেবা প্রদান করে।
  • অছি হিসেবে কাজঃ গ্রাহকের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়ে Commercial Bank গুলো অছি হিসেবে কাজ করে। যখন কোনো Commercial Bank অছি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সময় উক্ত ব্যক্তি মারা গেলে তার উত্তরাধিকারীর সকল প্রকারের চাহিদা যেমন পড়াশোনা, সুস্থ্যতার নিশ্চয়তা ও ক্রয়-বিক্রয়ের সকল কাজ Commercial Bank করে থাকে।
  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধিঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুপস্থিতিতে Commercial Bank কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকে। অর্থাৎ যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শাখা নেই সেখানে একটি নির্দিষ্ট Commercial Bank  (যেমন বাংলাদেশে সোনালী ব্যাংক) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে নিকাশ ঘরের প্রতিনিধিত্ব করে। এছাড়াও Commercial Bank গুলো ঋণ নিয়ন্ত্রণ, অর্থ বা মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সহায়তা করে থাকে।
  • আয়কর উপদেষ্টা (Income tax consultancy): Commercial Bank গ্রাহকের আয়কর বিশেষজ্ঞ হিসেবে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করে।
  • স্থির নির্দেশনা পালন (Execution of standing orders): Commercial Bank তার গ্রাহকদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থিরকৃত নির্দেশনা পালন করে। ব্যাংক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর পর গ্রাহকের আয়কর, ভাড়া, সুদ, বিমা প্রিমিয়াম পরিশোধ করে। এই ধরনের নৈমিত্তিক কাজগুলি সম্পাদনের জন্য Commercial Bankকে গ্রাহকদের বারবার নির্দেশনা দিতে হয় না। গ্রাহক একবার নির্দেশনা দিয়ে রাখে এবং বাণিজ্যিক ব্যাংক নিয়মিতভাবে সেই নির্দেশনা পালন করতে থাকে।
  • গোপনীয়তা রক্ষাঃ গ্রাহকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সময় সকল প্রকারের গোপনীয়তা রক্ষা করা বাণিজ্যিক ব্যাংকের দায়িত্ব। দায়িত্ববান ব্যাংকারদের দায়িত্ব হলো গ্রাহকের হিসাবের গোপনীয়তা রক্ষা করা। গ্রাহকের নির্দেশ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ, আইনগত অনুমতি অথবা আদালতের নির্দেশ ছাড়া কোনো ব্যাংক গ্রাহকের হিসাব সম্পর্কিত কোনো ধরনের তথ্য প্রকাশ করতে পারে না।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস কী?

বাণিজ্যিক ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস

বাণিজ্যিক ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস

বাণিজ্যিক ব্যাংকের আয়ের অনেকগুলো উৎস থাকে। কিন্তু আয়ের সব উৎস তেমন জনপ্রিয় বা আয়ের প্রধান উৎস না। নিচে বাণিজ্যিক ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎসসমূহ নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

  • ঋণের সুদঃ বাণিজ্যিক ব্যাংকের আয়ের উৎসগুলির মধ্যে ঋণের উপর আরোপিত সুদ সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।  Commercial Bank বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষ ঋণের সুদ গ্রহণ করে থাকে, যা তাদের আয়ের প্রধান উৎস।
  • বিনিয়োগঃ অর্থ উপার্জনের আরোও একটি উপায় হলো বিনিয়োগ। Commercial Bank শেয়ারবাজারে লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করে থাকে। শেয়ারবাজার ছাড়াও আয়ের অনেক উৎস রয়েছে যেখান থেকে Commercial Bankগুলো আয় করে থাকে।
  • সেবা প্রদান করে কমিশন অর্জনঃ ব্যাংক বিভিন্ন প্রকারের সেবা প্রদান করে বিভিন্ন ভাবে কমিশন অর্জন করে অর্থ উপার্জন করে। সেবা খাতের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক ড্রাফট, ট্রাভেলারস চেক ইত্যাদি সুবিধা প্রদান করা।
  • ব্যাংকের লকার ভাড়াঃ ব্যাংকের অনেক গ্রাহককে তাদের মূল্যবান জিনিস যেমন- অলংকার, দলিলপত্র এবং দরকারি তথ্য রাখার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো লকার ভাড়া দিয়ে থাকে। এর বিপরীতে ব্যাংক নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ নিয়ে থাকে।
  • প্রতিনিধিত্বমূলক কাজ থেকে অর্থ উপার্জনঃ গ্রাহকের প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন প্রকারের চেক ও বিল পেমেন্ট ইত্যাদি মাধ্যমে ব্যাংকগুলো গ্রাহকের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে এবং সেজন্য চার্জ নিয়ে থাকে।
  • শেয়ার ক্রয়বিক্রয় করার ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদানঃ শেয়ারবাজারে গ্রাহকদের শেয়ার ক্রয় – বিক্রয় করার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ চার্জ নিয়ে Commercial Bank গুলো সহায়তা প্রদান করে থাকে।
  • আমদানি রপ্তানি থেকে আয়ঃ কোন গ্রাহক বিদেশ থেকে কোনো দ্রব্য ক্রয় ও বিক্রয় করার ক্ষেত্র Commercial Bank গুলির সহায়তা নিয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকারের আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পন্ন করার জন্য ব্যাংকগুলি নির্দিষ্ট পরিমাণ সার্ভিস চার্জ নিয়ে থাকে।
  • প্রত্যয়পত্রঃ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আমদানিকারকদের ক্ষেত্রে প্রত্যয়পত্র (Letter of Credit) ইস্যু করে Commercial Bank কমিশন আয় করতে পারে।

উপরের আয়ের যতগুলো উৎস আলোচনা করা হয়েছে, এসব ছাড়াও আরোও অনেক উৎস রয়েছে যার মাধ্যমে Commercial Bank আয় করে থাকে। সব মিলিয়ে বলা যায় যে, Commercial Bank বিভিন্নভাবে গ্রাহকদেরকে সেবা প্রদান করে নির্দিষ্ট পরিমাণ সার্ভিস চার্জ নিয়ে অর্থ উপার্জন করে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের আর্থসামাজিক দায়িত্ব পালন (Commercial Bank functions in fulfilling socio-economic responsibilities)

উন্নয়নশীল দেশসমূহের বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ এক্ষেত্রে অধিক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ আর্থসামাজিক উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে কৃষকদের ক্ষুদ্রঋণ প্রদান; গ্রামভিত্তিক শিল্প ও ব্যবসায়ে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান; শিক্ষাবৃত্তি প্রদান; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দর্জি, মুচি, রিকশাচালক বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে ঋণদান প্রভৃতি সামাজিক দায়িত্ব পালন করে।   

উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, বাণিজ্যিক ব্যাংক অর্থনীতির মধ্যমণি। বর্তমানে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক উন্নয়নের ফলে আর্থিক লেনদেনের চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাণিজ্যিক ব্যাংকের গুরুত্ব অপরিসীম।