হাঁসের খাদ্য বাবদ ব্যয় বিবেচনা

টেকসই হাঁসের খামার স্থাপন করতে হলে হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপন সঠিক হতে হবে। কেননা, খামারের ব্যয়ের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ সরাসরি হাঁসের খাদ্য খরচ সংশ্লিষ্ঠ। হাঁসের খাদ্য খরচ শতকরা ৭০ ভাগের অতিরিক্ত হলে খামারে লোকশানের হার বৃদ্ধি পাবে। হাঁসের খামার পরিকল্পনাকালে হাঁসের খাদ্য বাবদ ব্যয় মোট ব্যয়ের ৬০ – ৭০ ভাগের মধ্যে সীমিত রাখার চেষ্টা করতে হবে।

হাঁসের খাদ্য উপাদানসমুহ

খাদ্যের মৌলিক উপাদান ৬টি। যথাঃ শর্করা, আমিষ, চর্বি, খনিজ পদার্থ, ভিইটামিন ও পানি। সুষম খাদ্যে এই ৬টি উপাদান সঠিক মাত্রায় থাকতে হয়। খাদ্যের উপকরণসমুহ তাদের পুষ্টি উপাদানের প্রাচুর্যতার উপর ভিত্তি করে ভাগ করা যেতে পারে। যেমনঃ শর্করা জাতীয় খাদ্য – ভুট্টা, গম, কাউন, চাউলের কুড়া, গমের ভূষি ইত্যাদি; আমিষ জাতীয় খাদ্য – সয়াবিন মিল, তিলের খৈল, শুটকি মাছ, মিট মিল ইত্য়াদি; চর্বি জাতীয় খাদ্য – এনিম্যাল ফ্যাট, ভেজিটেবল অয়েল, কর্ড লিভার অয়েল ইত্যাদি; ভিটামিন জাতীয় খাদ্য – শাক-সব্জি ও কৃত্রিম ভিটামিন; খনিজ পদার্থ – শামুক ও ঝিনুকের খোসা, ক্যালসিয়াম ফসফেট, রকসল্ট, লবন ইত্যাদি; এবং পানি।

দেহের ভিতরে শর্করা জাতীয় খাদ্য বিশ্লেষিত হয়ে তাপ উৎপাদনের মাধ্যমে দেহে শক্তি সরবরাহ করে। শর্করা জাতীয় খাদ্য ২ ধরনের। যথাঃ ১। সকল প্রকার দানাদার খাদ্যশস্য – ভুট্টা, গম, কাউন, যব, চাউল, সরগম ইত্যাদি; ২। আঁশ – সকল প্রকার দানাদার খাদ্যশস্যের উপজাত – চাউলের কুড়া, গমের ভুষি, ভুট্টার গুটেন ইত্যাদি। হাঁস মুরগির খাদ্যের বেশিরভাগ শর্করা পুষ্টি উপাদান। যেমন- খাদ্যে দানাদার উপকরণ শতকরা ৪০ – ৬০ ভাগ এবং উপজাত অংশ শতকরা ১০ – ৩০ ভাগ ব্যবহার করা হয়। খাদ্যে শর্করার পরিমান সাধারণতঃ কিলোক্যালরি হিসাবে গণনা করা হয়। হাঁসের প্রতি কেজি খাদ্যে সাধারণতঃ ২৭৫০ – ৩০০০ কিলোক্যালরি শর্করা ব্যবহার করতে হয়।

আমিষ জাতীয় খাদ্য দেহ কোষ গঠনে ব্যবহৃত হয়। দেহে নতুন কোষ গঠন, ক্ষয়প্রাপ্ত কোষ পুনর্গঠন ও নবায়নে আমিষ প্রয়োজন। তাছাড়া দেহের পালক উৎপাদন ও বিভিন্ন গ্রন্থি হতে হরমোন ও এনজাইম তৈরিতে আমিষের প্রয়োজন রয়োছে। খাদ্যের আমিষ ২২ ধরণের এমাইনো এসিড দ্বারা গঠিত। এ সকল এমাইনো এসিডের মধ্য়ে ৫ টিকে অত্যাবশ্যকীয় এমানো এসিড হিসাবে চিহ্নিত করা হয় যা কৃত্রিমভাবে খাদ্যে সরবরাহ করতে হয়।

হাঁসের খাদ্যে প্রাণিজ উৎস ও উদ্ভিজ্জ উৎস হতে আমিষ জাতীয় খাদ্য মিশ্রণ তৈরি ব্যবহার করা হয়। উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে সাধারণতঃ সয়াবিন মিল, তিলের ও অন্যান্য তৈল বীজের খৈল, তুলা বীজের খৈল, সবুজ শাক-সব্জি, ডাকউইড, এ্যাজোল ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়। অন্যদিকে প্রাণিজ উৎস হতে সাধারণতঃ শুটকি মাছের গুড়া, প্রোটিন কনসেন্ট্রেট, শামুক ও ঝিনুকের মাংসল অংশ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

হাঁসের খাদ্য তৈরিতে সাধারণতঃ শুরুতে ২০-২২% এবং ৮ সপ্তাহ বয়সের পর থেকে ১৬-১৭% আমিষ ব্যবহারে ভাল ফল পাওয়া যায়। বাড়ন্ত হাঁসের খাদ্যে অধিক হারে আমিষ ব্যবহার করলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি হয়। তবে এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। তবে মাংস উৎপাদনের উদ্দেশ্যে পালিত হাঁসের খাদ্যে বেশি আমিষ সরবরাহ করলে দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং অল্প সময়ে বিক্রয় উপযোগী হয়।

হাঁসের খাদ্যে ভিটামিন এর পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করার গুরুত্ব রয়েছে। কেননা, ভিটামিন কোষের কার্যক্রম সুরক্ষিত করে। কোষ গঠনেও সাহায্য করে। সাধারণতঃ খাদ্যে উপস্থিত বিভিন্ন উপাদান হতে হাঁস ভিটামিন সংগ্রহ করতে পারে কিন্তু সরবরাহকৃত খাদ্য উপাদানে অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমানে প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে না বিধায় কৃত্রিমভাবেও ভিটামিন সংযোজন করতে হয়। দ্রবনীয়তার ভিত্তিতে ভিটামিনকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ পানিতে দ্রবনীয়  ভিটামিন (বি ভিটামিনসমুহ ও সি) এবং চর্বিতে দ্রবনীয় ভিটামিন (ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে)। সাধারণতঃ কৃত্রিমভাবে খাদ্যে ভিটামিন বি, থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, ভিটামিন এডিই, পাইরোডক্সিন সরবরাহ করতে হয়।

হাঁসের খাদ্যে ম্যাক্রো ও মাইক্রো খনিজ পদার্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা লাগে। এসকল উপাদান হল ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, সোডিয়াম ক্লোরাইড, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, কপার, আয়োডিন, কোবাল্ট, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম ইত্যাদি।

দেহ কোষে শতকরা ৬০ – ৭০ ভাগ পানি থাকে। তাই খাদ্যের সাথে পর্যাপ্ত পানি থাকা অত্যন্ত জরুরি। পানির অভাবে হাঁসের উৎপাদন, উৎপাদনশীলতা কমে যায়, দৈহিক বৃদ্ধি বিঘ্নিত হয়, রোগ সংবেদনশীলতা ও মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়। ফলে খামারে লোকশান হয়। পানি খাদ্য বস্তু নরম ও সহযে পরিপাকযোগ্য করে, খাদ্যের পুষ্টি উপাদান দেহের বিভিন্ন স্থানে পরিবহণ, দেহে উৎপাদিত ক্ষতিকর পদার্থ অপসারণ এবং সর্বোপরি খাদ্য বিশ্লেষণ, বিপাক, হরমোন, ঈনজাইম ও রক্ত তৈরিতে অংশ নেয়।

 হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

 হাঁসের খাদ্য – পুষ্টি নির্দেশনা

হাঁসের খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নির্দেশনা নিম্নের সারনিতে দেয়া হলো-

পুষ্টি উপাদানস্টার্টারগ্রোয়ারব্রিডার/লেয়ার
বিপাকীয় শক্তি (কি.ক্যালরি/কেজি)২৯০০৩০০০২৭৫০
প্রোটিন %২০-২২১৭-১৯১৬
চর্বি %
ক্যালসিয়াম %
ফসফরাস %০.৪০০.৩৫০.৪০
ম্যাংগানিজ (মিগ্রা/কেজি)৬০৫০৪০
লাইসিন(মিগ্রা/কেজি)১.১৬০.৯০০.৯৪
আর্জিনিন (মিগ্রা/কেজি)০.৯৪১.০০০.৬০
থ্রিওনাইন (মিগ্রা/কেজি)০.৮৪০.৬৬০.৬০
নিয়াসিন (মিগ্রা/কেজি)৫৫৪০৫৫
মিথিওনাইন + সিস্টিন %০.৭৬০.৭৭০.৮০
পেন্টোথানিক এসিড (মিগ্রা/কেজি)১৫১০২০
ভিটামিন এ (আইইউ)১০০০০৮০০০১২০০০
ভিটামিন ডি(মিগ্রা/কেজি)৩০০২২.৫০৬২.৫০
ভিটামিন এ (আইইউ)২৬.৪৭
রিবোফ্লাবিন (মিগ্রা/কেজি)১০১০
পাইরোডক্সিন (মিগ্রা/কেজি)
ভিটামিন কে (মিগ্রা/কেজি)২.৫০২.০০২.৫০

 

বাচ্চা হাঁসের খাদ্য বা স্টার্টার রেশন ফরমুলা

স্টার্টার খাদ্য বলতে ১-৬ সপ্তাহ বয়সের হাঁসের খাদ্য বুঝায়। নিচে একটি আদর্শ স্টার্টার খাদ্যের ফরমুলা দেয়া হলো-

খাদ্য উপকরণপরিমান (কেজি)
গম ভাঙ্গা৩৬ – ৩৭
ভু্টা ভাঙ্গা১৮
চালের কুড়া১৭ – ১৮
সয়াবিন মিল২২
প্রোটিন কনসেনট্রেট
ঝিনুকের গুড়া অথবা লাইম স্টোন
ডিসিপি১.২৫
ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স০.২৫
লাইসিন০.১০
মিথিওনাইন০.১০
লবন০.৩০
মোট১০০ কেজি

হাঁসের খাদ্যের পুষ্টি নির্দেশনা অনুসরণ সাপেক্ষে স্থানীয়ভাবে সহজলভ্যতা ও খাদ্য উপকরণের দাম বিবেচনা করে খামারী নিজেই অথবা তার খামারের পরামর্শকের সহায়তায় কমদামে কার্যকর রেশন ফরমুলেশন করতে পারেন। তাতে খামারের খরচ কমে লাভ বাড়তে পারে।

বাচ্চা হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

বাচ্চা হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

বাড়ন্ত হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

  • একটি পালে বা ফ্লকে কি পরিমান খাবার দিতে হবে তা অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
  • খাদ্য গ্রহণের হার খাদ্যে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানের উপর নির্ভর করে।
  • ঘরের তাপমাতরা, আর্দ্রতা, আলোর পরিমান ইত্যাদি বিষয়ও খাদ্য গ্রহনের পরিমান পরিবর্তন করে থাকে।
  • খাদ্যে নির্ধারিত পরিমান অমিষ ও বিপাকীয় শক্তি থাকতে হবে।
  • খাদ্যে সঠিক মাত্রায় এ্যামাইনো এসিড, কার্বোহাইড্রেট, পানি, ফ্যাট, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন থাকতে হবে।
  • খামারের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাও খাদ্য গ্রহণের উপর প্রভাব ফেলে।
  • কাঁচামালের গুণগতমান ও সঠিক না হলে খাদ্যের গুণগত মানও কমে যায়।
  • খাদ্যের গুণগত মান ও খাদ্য গ্রহণের পরিমান সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে না পারলে খামারে মৃত্যুহার বাড়ে, হাঁসের শারীরিক বৃদ্ধি আশানুরূপ হয় না এবং ডিম ও মাংস উৎপাদন কমে যায়।
  • হাঁসকে কখনোই মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার দেয়া যাবে না। ঙেয়াদোত্তীর্ণ খাবার থেকে খামারে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।
  • ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দৈনিক ৩ বার টাটকা খাবার সরবরাহ করতে হয়।
  • ৬ সপ্তাহ বয়সের পর প্রয়োজনীয় খাদ্যের পরিমান দৈহিক ওজনের সাথে সমন্বয় করে নির্ধারণ করতে হয়।
  • খাবারের ব্যাগের মুখ খোলার পর তাড়াতাড়ি তা শেষ করতে হয়। একটি খোলা বস্তার খাবার শেষ না করে আরেকটি বস্তা ফোলা উচিৎ নয়।
  • খাদ্যের ব্যাগ বাঁশ, কাঠ বা প্লাস্টিকের পাটাতনের উপর শুষ্ক ও আলো-বাতাসযুক্ত স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।
  • খামারে হাঁশের সংখ্যা ও বয়স অনুপাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক খাবার পাত্র ও পানির পাত্র দিতে হবে।
  • খাবার পাত্র ও পানির পাত্র নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে।

    বাড়ন্ত হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

    বাড়ন্ত হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

বাড়ন্ত হাঁসের খাদ্য তালিকা / গ্রোয়ার রেশন ফরমুলা

৭-১৯ সপ্তাহ বয়সের হাঁসের খাদ্য গ্রোয়ার রেশন নামে পরিচিত। নিচে একটি আদর্শ গ্রোয়ার রেশনের ফরমুলা দেয়া হলো –

 

খাদ্য উপকরণপরিমান (কেজি)
গম ভাঙ্গা৩৭
ভু্টা ভাঙ্গা১৮
চালের কুড়া১৭
সয়াবিন মিল২২
প্রোটিন কনসেনট্রেট
ঝিনুকের গুড়া অথবা লাইম স্টোন
ডিসিপি১.২৫
ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স০.২৫
লাইসিন০.১০
মিথিওনাইন০.১০
লবন০.৩০
মোট১০০ কেজি

হাঁসের খাদ্যের পুষ্টি নির্দেশনা অনুসরণ সাপেক্ষে স্থানীয়ভাবে সহজলভ্যতা ও খাদ্য উপকরণের দাম বিবেচনা করে খামারী নিজেই অথবা তার খামারের পরামর্শকের সহায়তায় কমদামে কার্যকর রেশন ফরমুলেশন করতে পারেন। তাতে খামারের খরচ কমে লাভ বাড়তে পারে।

ডিমপাড়া হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

  • একটি পালে বা ফ্লকে কি পরিমান খাবার দিতে হবে তা অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
  • খাদ্য গ্রহণের হার খাদ্যে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানের উপর নির্ভর করে।
  • ঘরের তাপমাতরা, আর্দ্রতা, আলোর পরিমান ইত্যাদি বিষয়ও খাদ্য গ্রহনের পরিমান পরিবর্তন করে থাকে।
  • খাদ্যে নির্ধারিত পরিমান অমিষ ও বিপাকীয় শক্তি থাকতে হবে।
  • খাদ্যে সঠিক মাত্রায় এ্যামাইনো এসিড, কার্বোহাইড্রেট, পানি, ফ্যাট, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন থাকতে হবে।
  • খাদ্যের গুণগত মান ও খাদ্য গ্রহণের পরিমান সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে না পারলে খামারে মৃত্যুহার বাড়ে এবং ডিম ও মাংস উৎপাদন কমে যায়।
  • প্রাপ্ত বয়স্ত একটি হাঁস সাধারণতঃ ১৩০ – ১৫০ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করে থাকে।
  • হাঁসকে কখনোই মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার দেয়া যাবে না। ঙেয়াদোত্তীর্ণ খাবার থেকে খামারে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।
  • খাবারের ব্যাগের মুখ খোলার পর তাড়াতাড়ি তা শেষ করতে হয়। একটি খোলা বস্তার খাবার শেষ না করে আরেকটি বস্তা ফোলা উচিৎ নয়।
  • খামারে হাঁশের সংখ্যা ও বয়স অনুপাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক খাবার পাত্র ও পানির পাত্র দিতে হবে।
  • খাবার পাত্র ও পানির পাত্র নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে।
  • আমাদের দেশে সাধারণতঃ দিনের বেলা পানিতে চরানো হয় এবং প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় খাদ্য সরবরাহ করা হয়। দিনের বেলা হাঁস হাওড়, বাওড়, নদী-নালা, খাল, বিল, পুকুর ইত্যাদি প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন শামুক, ঝিনুক, শালুক, ঘেচু, ছোট মাছ, পোকা-মাকড়, জলজ উদ্ভিদ ও নানা প্রকার ঘাস, লতা পাতা খায়। এতে খামারের খাদ্য খরচ অনেকাংশে কমে যায় এবং খামার লাভজনক হয়।

    ডিমপাড়া হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

    ডিমপাড়া হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

ডিমপাড়া হাঁসের খাদ্য তালিকা / ব্রিডার বা লেয়ার রেশন ফরমুলা

১৯ সপ্তাহ বয়সের পর থেকে ডিম পাড়া শেষে কাল করা বা বাদ দেয়ার আগ পর্যন্ত হাঁসের খাদ্য লেয়ার না বরিডার রেশন নামে পরিচিত। নিচে একটি আদর্শ লেয়ার রেশনের ফরমুলা দেয়া হলো –

খাদ্য উপকরণপরিমান (কেজি)
গম ভাঙ্গা৩৭
ভু্টা ভাঙ্গা১৬
চালের কুড়া১৭
সয়াবিন মিল২৩
প্রোটিন কনসেনট্রেট
ঝিনুকের গুড়া অথবা লাইম স্টোন৩.৫০
ডিসিপি০.৭৫
ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স০.২৫
লাইসিন০.১০
মিথিওনাইন০.১০
লবন০.৩০
মোট১০০ কেজি

হাঁসের খাদ্যের পুষ্টি নির্দেশনা অনুসরণ সাপেক্ষে স্থানীয়ভাবে সহজলভ্যতা ও খাদ্য উপকরণের দাম বিবেচনা করে খামারী নিজেই অথবা তার খামারের পরামর্শকের সহায়তায় কমদামে কার্যকর রেশন ফরমুলেশন করতে পারেন। তাতে খামারের খরচ কমে লাভ বাড়তে পারে।

হাঁসের খামারে পানি ব্যবস্থাপনা

  • বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
  • বয়স বাড়ার সাথে সাথে পানির পাত্রের উচ্চতা বাড়াতে হবে।
  • হাঁসের সংখ্যা অনুপাতে পানির পাতরের সংখ্যা সমন্বয় করতে হবে।
  • দৈনিক কমপক্ষে ৪ বার পানি সরবরাহ করতে হবে।
  • পানির পাত্র প্রতিদিন পরিস্কার করতে হবে।
  • সুযোগ থাকা সাপেক্ষে হাঁসকে পানিতে চরানোর ব্যবস্থা করতে হবে।