সূর্যমুখী তেল সূর্যমুখী বীজ থেকে উৎপাদিত একটি অ-উদ্বায়ী তেল। সূর্যমুখী তেল সাধারণত রান্নার তেল হিসাবে ব্যবহৃত হয়। সেইসাথে প্রসাধনী তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে ভাজা পোড়া খাবার খাওয়ার জন্য সূর্যমুখী তেলের ভাল বিকল্প নাই।

Table of Contents

সূর্যমুখীর ইতিহাস

সূর্যমুখী উদ্ভিদের আদি নিবাস মধ্য-দক্ষিণ আমেরিকা। সূর্যমুখী উদ্ভিদের উৎপত্তি মেক্সিকো এবং পেরুতে। আমেরিকানরা 5000 বছরেরও বেশি সময় ধরে সূর্যমুখী ব্যবহার করে আসছে। আজ সূর্যমুখী তেল বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় তেল।

আমাদের দেশে কম প্রচলিত কিন্তু অতি পরিচিত একটি তেল হচ্ছে সূর্যমূখী তেল। সূর্যমূখী এক ধরণের একবর্ষজীবি ফুল গাছ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে।

এ গাছ প্রায় ৩ মিটার (৯.৮ ফুট) লম্বা হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরন করা হয়েছে।

সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী

২০২১-২০২২ সালে পৃথীবিতে সূর্যমুখীর উৎপাদন

বর্তমান পৃথীবিতে সূর্যমুখী বীজের প্রধান উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে ইউক্রেন। এর পরেই রয়েছে রাশিয়ার অবস্থান।

নিচে সূর্যমুখীর বীজের প্রধান প্রধান উৎপাদনকারী দেশের তালিকা দেয়া হল-

ক্রমিক নংদেশের নামসূর্যমুখীর বীজের উৎপাদন পরিমান (মিলিয়ন মেট্রিক টন)
ইউক্রেন১৭.৫
রাশিয়া১৫.৫
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন১০.৪
আর্জেন্টিনা৩.৪
টার্কি১.৭৫
অন্যান্য৮.৭১
মোট৫৭.২৬

 

সূর্যমুখী তেলের পুষ্টি তথ্য

১ টেবিল চামচ সূর্যমুখী তেলে রয়েছে ১২০ ক্যালরি খাদ্য শক্তি, ০ গ্রাম প্রোটিন, ১৪ গ্রাম ফ্যাট, ০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ০ গ্রাম ফাইবার।

নিচে ১ কাপ (১ কাপ = ২২৪ গ্রাম) সূর্যমুখী তেলের পুষ্টি তথ্য দেয়া হল

 

উপাদান

পরিমান

শক্তি (Energy)১৯৮০ ক্যালরি
মোট চর্বি (Total fat)২২৪ গ্রাম
সম্পৃক্ত চর্বি (Saturated Fat)২৩ গ্রাম
মোট শর্করা (Total Carbohydrate)০ গ্রাম
আমিষ (Protein)০ গ্রাম
কোলেস্টেরল (Cholesterol)০ গ্রাম
এলকোহল (Alcohol)০ গ্রাম
ভিটামিন ই (Vitamin E (alpha-tocopherol)৯২.০২ মিলি গ্রাম
ভিটামিন কে (Vitamin K)১২.১ মাইক্রোগ্রাম
কোলিন (Choline)০.৪ মিলি গ্রাম

 

Source: USDA Food and nutrient database

 

Fats and Fatty Acids in 1 cup (224gm) of Sunflower Oil

Fat224.000 g
  Saturated fatty acids23.072 g
    Hexadecanoic acid – 13.216 g
    Octadecanoic acid – 10.080 g
  Monounsaturated fatty acids ( Octadecenoic acid)43.680 g
  Polyunsaturated fatty acids (Octadecadienoic acid)147.168 g

 

Source: USDA Food and nutrient database

সূর্যমুখী তেল

Types of Fatty Acids in Sunflower Oil

আরও পড়তে পারেন: খাদ্যের মান বলতে কি বুঝায়? 

সূর্যমুখী তেলের গুনাগুন

  • সূর্যমুখীর তেল রান্নার তেল হিসেবে ভালো।
  • হৃদ্‌রোগ, অ্যাজমা ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
  • সূর্যমুখীর তেলে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি থাকে, যা আমাদের শরীরের দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে।
  • এই তেলে ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে, যা মানসিক চাপ কমায়।
  • শরীরের ওজন কমানোর জন্য রান্নায় আজকাল এই তেল বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
  • সূর্যমুখীর বীজের তেল স্বাস্থ্যর জন্য অসাধারণ। অন্যান্য ভোজ্য তেলে যেসব ক্ষতিকারক উপাদান (বিশেষ করে কোলেস্টেরল) থাকে সূর্যমুখীতে তা নেই।
  • আন্তর্জাতিক পুষ্টিবিদদের দেওয়া অনলাইন তথ্যসূত্র থেকে পাওয়া তথ্যমতে, সূর্যমুখী তেলে আছে মানবদেহের জন্য উপকারী ওমেগা ৯ ও ওমেগা ৬, আছে অলিক অ্যাসিড।
  • সূর্যমুখীর তেলে আছে শতকরা ১০০ ভাগ উপকারী ফ্যাট।
  • সূর্যমুখীর তেল সম্পূর্ণ ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলমুক্ত।
  • এই তেলে ভিটামিন ‘ই’, ভিটামিন ‘কে’–এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন রয়েছে।
  • মুখের যত্নে দাঁতের জন্য উপকারী একমাত্র তেল।
  • হৃদরোগী, ডায়াবেটিসের রোগী উচ্চ রক্তচাপের রোগী, কিডনি রোগীর জন্যও সূর্যমুখীর তেল নিরাপদ।

তাহলে আসুন এবার জেনে নেই সূর্যমূখী তেলের নানা ধরনের উপকারিতা সম্পর্কে-

 

সূর্যমূখী তেলের উপকারিতা

সূর্যমুখী বীজে কোলেস্টেরল এবং সোডিয়াম খুব কম থাকে, তাই এটি আপনার হার্টের জন্য ভালো। এর বীজ ভিটামিন B6, ভিটামিন E, থায়ামিন, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ এবং সেলেনিয়ামের ভালো উৎস। আপনার প্রতিদিনের পুষ্টি বজায় রাখতে এই বীজ খাওয়া উচিৎ। সূর্যমুখী বীজ আপনার হজম এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যও দুর্দান্ত।

সূর্যমুখী তেল হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে

সূর্যমুখী তেলে রয়েছে কোলিন এবং ফেনোলিক অ্যাসিড যা হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।

সূর্যমুখীর তেল ভিটামিন-E সমৃদ্ধ। ভিটামিন-E হচ্ছে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মানবদেহের মধ্যে ফ্রি র‍্যাডিকেলস ছড়াতে বাধা দেয়। ফ্রি র‍্যাডিকেলগুলো হল বিপজ্জনক অণু যা শরীরের সেই সব ভাল অণুগুলিকে আক্রমণ করে যেগুলি শরীরের অপরিহার্য ক্রিয়াকলাপের ওপর কাজ করে।

সূর্যমুখীর তেল ভিটামিন-E এর একটি প্রাকৃতিক উৎস, যা হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি রক্তের ধমনীতে কোলেস্টেরল জমা হতে বাধা দিয়ে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী তেলে কোলেস্টেরল নেই। এতে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা ভালো চর্বি হিসেবে বিবেচিত হয়, যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। সূর্যমুখীর বীজ পিষে নিয়মিত রোগীকে দিন। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক।

সূর্যমুখী তেল শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়ায়

সূর্যমুখী তেলে উপস্থিত মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট শক্তি জোগায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এক কাপ (২২৪ গ্রাম) সূর্যমুখী তেলে রয়েছে ১৯৮০ ক্যালরি বা এক টেবিল চামচ তেলে রয়েছে ১২০ ক্যালরি খাদ্যশক্তি।  প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি থাকায় সূর্যমুখী বীজের তেল আমাদের দুর্বলতা কাটাতে কার্যকরী। আমাদের দেহের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং দীর্ঘদিন কর্মক্ষম রাখতেও সূর্যমুখী তেলের ভূমিকা অনন্য।

হাড়ের সমস্যা সমাধানে সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী আমাদের দেহের হাড় সুস্থ রাখে ও মজবুত করে।

হাড়ের জোড়ায় ব্যথা সারিয়ে তুলতে এই তেল খুবই উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, যা হাড়কে মজবুত করে। এর পাশাপাশি এটি হাড়ের জয়েন্টগুলোতে নমনীয়তা ও শক্তি আনে।

মানবদেহে ম্যাগনেসিয়ামের প্রায় ⅔ অংশ হাড়ে জমা হয়। কিছু অংশ ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের দৈহিক গঠন এবং শক্তিতে সাহায্য করে, বাকি ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের পৃষ্ঠে পাওয়া যায়, যা প্রয়োজন অনুযায়ী শরীর ব্যবহার করে।

মস্তিষ্কের জন্য সূর্যমুখী তেল

এই তেলে উপস্থিত কোলিন স্মৃতিশক্তি এবং দৃষ্টিশক্তির কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম উপাদান আমাদের মানসিক চাপ দূর করে। মাইগ্রেনের সমস্যা এবং আমাদের মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে এই উপাদান।

সূর্যমুখী তেল ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে

সূর্যমুখীর তেলে থাকা সেলেনিয়াম উপাদানজটিল ব্যাধি ক্যানসার প্রতিরোধ করতে খুবই পারদর্শী ।

সূর্যমুখী তেল শরীরের ব্যথা ও ক্ষয় রোগ দূর করে

সূর্যমুখী তেলের ভিটামিন-ই আমাদের দেহের নানা রকম ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। সেই সাথে সূর্যমুখী বীজের তেলে বিদ্যমান ভিটামিন-ই আমাদের ত্বককে রক্ষা করে সূর্যের আল্ট্রা-ভায়োলেট রশ্মি থেকে। ত্বকের অযথা বুড়িয়ে যাওয়া এবং ক্ষয় রোধে এই তেল খুবই উপকারী।

সূর্যমুখী তেল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

সূর্যমুখী তেলের ভিটামিন ই আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দারুণভাবে কার্যকরী করে তোলে।

হাঁপানির রোগ নিয়ন্ত্রণে সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী বীজের তেলে অন্যান্য রান্নার তেলের চেয়ে বেশি ভিটামিন-E থাকে। তাই এই তেলটি আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে হাঁপানির মতো রোগ এড়ানো যায়।

ত্বকের যত্নে সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী বীজের তেল ত্বকের যত্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সূর্যমুখী বীজের তেলে রয়েছে ভিটামিন-ই ও ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যে উপকারী। এই তেল সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে সৌন্দর্য বাড়াতে সহায়তা করে। এ তেল ত্বককে আর্দ্র রেখে নরম ও কোমল করে।

ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে

সূর্যমুখী বীজের তেল শুষ্কতার বিরুদ্ধে লড়াই করে ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ত্বকের আর্দ্রতা বাড়াতে সূর্যমুখী বীজের তেল কার্যকর। এই তেলে থাকা লিনোলিক অ্যাসিডসহ অন্যান্য উপাদান ত্বককে আর্দ্র রাখে। এ ছাড়া রয়েছে ভিটামিন ই, যা ত্বককে গভীর থেকে আর্দ্র রাখে।

ব্রণ প্রতিরোধ করে

সূর্যমুখী বীজের তেলে ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা ত্বককে ব্যাকটেরিয়ার থেকে রক্ষা করে ব্রণ প্রতিরোধ করে। সূর্যমুখী তেলে রয়েছে নন-কমডোজেনিক প্রাকৃতিক উপাদান, যা ত্বকের যত্নে দারুণ কার্যকর। তাই ব্রণ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে আপনি ব্যবহার করতে পারেন। ভিটামিন ই শক্তিশালী প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সূর্যমুখী তেলে রয়েছে। এটি ফ্রি রেডিক্যাল থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়, যা ব্রণের জন্য দায়ী। সূর্যমুখী তেলে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে দূরে রাখে।

বয়সের ছাপ দূর করে

সূর্যমুখী বীজের তেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের বলিরেখাসহ নানা সমস্যা দূর করে বয়সের ছাপ পড়া থেকে সুরক্ষা দেয়। এতে থাকা ভিটামিন ই ত্বকের যত্নে কার্যকর। সূর্যমুখী তেল কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বককে নরম, কোমল ও তারুণ্য এনে দেয়।

সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা

সূর্যমুখী বীজের তেলে রয়েছে প্রাকৃতিক সান প্রটেকটিভ উপাদান। এতে থাকা ভিটামিন এ ও সি সান ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে ত্বককে সুস্থ ও মসৃণ রাখে। সূর্যমুখী তেলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড ও লিনোলিক অ্যাসিড, যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।

যেভাবে ত্বকে সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করবেন

অল্প সূর্যমুখী তেল হাতের তালুয় নিয়ে উষ্ণ না হওয়া পর্যন্ত ঘষতে থাকুন। এরপর সম্পূর্ণ শুষে না নেওয়া পর্যন্ত ত্বকে ম্যাসাজ করুন। আরো ভালো ফল পেতে এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল, ল্যাভেন্ডার বা লেমন এসেনশিয়াল অয়েল মেশাতে পারেন। এ ছাড়া এমন প্রসাধন কিনতে পারেন, যাতে সূর্যমুখী তেলের উপাদান রয়েছে। আপনি যদি আরামদায়ক বডি ম্যাসাজ চান, তবে সূর্যমুখী তেলের জুড়ি নেই।

চুলের যত্নে সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী বীজের তেল ত্বকের মতো আপনার চুলেও ময়েশ্চারাইজিং প্রভাব ফেলে। এই তেলে পাওয়া প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো আপনার চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

এই বহুমুখী তেল আপনার চুলের উজ্জ্বলতা ও গঠন বজায় রাখে এবং প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। গোসলের আগে সপ্তাহে একবার স্ক্যাল্প ম্যাসাজ হিসেবে সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি চুলের পুষ্টি জোগায় এবং ভাঙ্গা প্রতিরোধ করে।

 

উপসংহার

আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠী ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে আমদানি করা সয়াবিন তেলের ওপর নির্ভরশীল। এই সয়াবিন তেলে রয়েছে স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকারক অনেক উপাদান ।

সেক্ষেত্রে সূর্যমুখী হতে পারে স্বাস্থ্য রক্ষার গুণসম্পন্ন ভোজ্য তেলগুলির একটি। আমরা যেভাবেই তার তেল আহরণ করি না কেন, তা নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত। আমাদের তেলসংক্রান্ত জটিল সব অসুখের হাত থেকে মুক্তি পেতে তেলের ব্যবহার বাদ দিলে চলবে না। কারণ  শরীরের জন্য তেলেরও দরকার আছে । সেই অর্থে সূর্যমুখীর তেল হতে পারে আমাদের জন্য আশীর্বাদ।

 

রাজধানীসহ দেশের মহানগরসমুহের চেইন মার্কেটে ও সাধারণ মুদিদোকানে এমনকি সারা দেশের শহর–গ্রামের বাজারের প্রসিদ্ধ কিছু কিছু মুদিদোকানে বোতলজাত সূর্যমুখীর তেল কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানির নিজস্ব উৎপাদিত ও বিদেশ থেকে আমদানি করা।

দেশীয় বাজারসহ আন্তর্জাতিক বাজারেও সূর্যমুখী বীজের তেলের বিপুল চাহিদা রয়েছে।

সাধারণ মানুষের  ক্রয়ক্ষমতার অনুকূলে নিরাপদ স্বাস্থ্যপ্রদ ভোজ্য তেলের বিষয়টি মাথায় রেখে সূর্যমুখী উৎপাদনে বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ হতে পারে । সরকারিভাবে রিফাইন্ড মেশিনারি ও সরঞ্জাম আমদানির মাধ্যমে রিফাইন্ড মেশিন স্থাপন করা গেলে ও সূর্যমুখীর বীজ থেকে তেল সংগ্রহ ও রিফাইন্ড সূর্যমুখী তেল বোতলজাত করে  বাজারজাত করা এখন সময়ের দাবী। অনেক উদ্যোক্তা ইতি মধ্যে সূর্যমুখী বীজ ও তেল উৎপাদনে এগিয়ে এসেছেন।  প্রয়োজনে সরকারি ভর্তুকি দিয়ে হলেও সুর্যমুখীর তেল সহজলভ্য ও এর মুল্য সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা গেলে বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা হবে।

আরও পড়তে পারেন: লাল চাল কেন খাবেন?