আমরা প্রায়শই রাজস্ব নীতি ও মুদ্রা নীতির কথা শুনে থাকি। কিন্তু রাজস্ব নীতি ও মুদ্রা নীতি কাকে বলে বা রাজস্ব নীতি ও মুদ্রা নীতির মধ্যে পার্থক্য কি তা অনেকেই জানি না। এই আর্টিকেলটিতে আমরা তা জানার চেষ্টা করব। 

রাজস্ব নীতি

সরকারের অর্থনৈতিক নীতি

Table of Contents

 

রাজস্ব নীতি (Fiscal Policy):

একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ অনেকগুলি উপাদনের উপর নির্ভরশীল, আর সেই উপাদনগুলির উপর প্রভাব বিস্তার করার কৌশলই হল রাজস্ব নীতি। এটি করে থাকে সরকার।

অন্যভাবে বলা যায়, সামষ্টিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ পরিচলনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার যে নীতি প্রণয়ন করে তাকে রাজস্ব নীতি বা আর্থিক নীতি বলে। আর্থিক নীতি বলতে একটি দেশের সরকারের আয় এবং ব্যয় ব্যবস্থাপনার কলা কৌশলকে বুঝায়। সরকার নির্দিষ্ট অর্থবছরের নির্ধারিত ব্যয় সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে রাজস্ব বা আয় নিরূপণ করে। অর্থাৎ, সরকার প্রথমে ব্যয় নির্ধারণ করে এবং নির্ধারিত ব্যয়ের সাথে সমন্বয় করে রাজস্ব বা আয় নির্ধারণ করে। সাধারণত জাতীয় বাজেটে সরকারের রাজস্ব নীতির প্রকাশ ঘটে থাকে। 

জাতীয় বাজেট হচ্ছে দেশের সরকার প্রণীত রাষ্ট্রের বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের পরিকল্পনা যেটি প্রতিবেদন বা দলিল আকারে প্রকাশ করা হয়। মূলত, সরকারি রাজস্ব বা আয় এবং ব্যয় নিরূপণ ও বাজেট প্রণয়ন সম্পর্কিত নীতিই আর্থিক নীতি হিসেবে পরিচিত। রাজস্ব নীতির মূল লক্ষ্য জনকল্যাণ।

আর্থিক নীতি সারা বছর ধরে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উপর প্রভাব বিস্তার করে।

রাজস্ব নীতি বা আর্থিক নীতির সংজ্ঞা

কোনও দেশের সরকার যখন দেশের অর্থনীতিতে পণ্য ও পরিষেবার সামগ্রিক চাহিদা এবং সরবরাহের উপর প্রভাব ফেলতে তার করের রাজস্ব এবং ব্যয় নীতিমালা প্রয়োগ করে তখন তা আর্থিক নীতি বা রাজস্ব নীতি  হিসাবে পরিচিত। বিভিন্ন উৎসের মাধ্যমে সরকারী প্রাপ্তি এবং বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ব্যয় করার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে এটি সরকারের একটি কৌশল। একটি দেশের আর্থিক নীতি প্রতি বছর বাজেটের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন।

রাজস্ব নীতির লক্ষ্য

পূর্বেই বলা হয়েছে রাজস্ব নীতির মূল লক্ষ্য জনকল্যাণ। তবে দেশ বা সরকারভেদে রাজস্ব নীতির ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। জনকল্যাণের জন্য প্রয়োজন একটি স্থিতিশীল সামগ্রিক অর্থনীতি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উন্নয়ন, জাতীয় আয়ের সঠিক ব্যবহার এবং নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি। ফলে উক্ত সামষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদানসমূহের সঠিক ব্যবস্থাপনাই রাজস্ব নীতির লক্ষ্য হিসেবে বিবেচ্য। 

রাজস্ব নীতির ধরণ

দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা নির্দেশ করে রাজস্ব নীতি কেমন হবে। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এবং জনগণের প্রতি প্রদত্ত রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকার রাজস্ব নীতি নির্ধারণ করে থাকে অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ব্যয় ও রাজস্ব নির্ধারণ করে থাকে। রাজস্ব নীতি সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে-

নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতি

 সাধারণত অর্থনৈতিক অবস্থা যখন স্থিতিশীল থাকে তখন নিরপেক্ষ আর্থিক নীতি অবলম্বন করা হয়, তখন অর্থনৈতিক প্রসার বা অর্থনৈতিক মন্দা কোনটাই ঘটে না। এক্ষেত্রে সরকারের রাজস্ব আয়  এবং ব্যয় প্রায় সমান থাকে।  অর্থাৎ অর্থনৈতিক কার্যকলাপের উপর রাজস্ব নীতির আলাদা কোন প্রভাব পড়ে না। তাই একে নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতি।

সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব নীতি

 সাধারণত অর্থনৈতিক মন্দা চলাকালীন সময়ে সরকার ‘অর্থনৈতিক চক্র সংকোচন’ মোকাবেলায় এই নীতি অনুসরণ করে থাকে। অর্থনৈতিক মন্দায় অর্থ প্রবাহ কমে যায়। মানুষের আয় কমে যায়। তাই সরকার রাজস্ব আয় সংগ্রহের থেকে ব্যয় বেশি করে। বিশেষ করে জনসাধারণের সুবিধায় ব্যবহার্য অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রণোদনা দিয়ে থাকে। সেই সাথে কর হার কমিয়ে দেয় যাতে জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রাজস্ব নীতির জাতীয় বাজেটভিত্তিক প্রয়োগ বিবেচনায় এক্ষেত্রে ঘাটতি বাজেট প্রণয়ন করা হয়।

সংকোচনমূলক রাজস্ব নীতি

 এই ধরনের রাজস্ব নীতি সরকার সাধারণত মুদ্রাস্ফীতির চাপ সামাল দিতে গ্রহণ করে থাকে। এক্ষেত্রে সরকার হয় কর হার বাড়িয়ে দেয় অথবা সামগ্রিক সরকারী ব্যয় কমাতে চায় অথবা উভয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কর হার বৃদ্ধি পেলে জনসাধারণের তথা ব্যবসায়ীদের খরচযোগ্য আয় কমে যায়। অন্যদিকে সরকারের ব্যয় কমে গেলে সেটা মোট দেশজ উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব ফেলে অর্থাৎ মোট দেশজ উৎপাদন কমে যায়। এতে মুদ্রাস্ফীতির উপর চাপ কমে কিন্তু সেই সাথে বেকারত্ব বেড়ে যায়।

রাজস্ব নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যম বা রাজস্ব নীতির হাতিয়ারসমূহ

 জাতীয় বাজেটেই রাজস্ব নীতির প্রতিফলন ঘটে থাকে। তাই রাজস্ব নীতির হাতিয়ার বা রাজস্ব নীতি অর্থায়নের মাধ্যম বলতে আসলে জাতীয় বাজেটে অর্থায়নের মাধ্যমগুলোকে বুঝানো হয়। সাধারণত বাজেটের অর্থায়ন হয় নিন্মোক্ত উৎসসমুহ থেকে-

সরকারি রাজস্ব

বাজেটের অর্থায়নের মূল উৎস হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন রাজস্ব বা আয়। সরকারি রাজস্বকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

কর রাজস্ব 

সরকার বাজেট প্রনয়নকালে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার উপরে যে কর আরোপ করে তাকে কর রাজস্ব বলে। কর রাজস্বের মধ্যে আছে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর, বাণিজ্য শুল্ক, আবগারী শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, ভুমি রাজস্ব, ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প এবং অন্যান্য করসমুহ। সরকারি আয়ের সিংহভাগই আসে বিভিন্ন রকমের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কর থেকে।

কর বহির্ভূত রাজস্ব 

কর বহির্ভূত রাজস্বের মধ্যে আছে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হতে লভ্যাংশ ও মুনাফা, সরকার প্রদত্ত ঋণের থেকে প্রাপ্ত সুদ, সরকারি সেবা খাত থেকে প্রাপ্ত আয় এবং বিভিন্ন দণ্ড ও জরিমান থেকে প্রাপ্ত অর্থ।

 এছাড়াও আরও কিছু ক্ষেত্র থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করে থাকে।

ঋণ গ্রহণ

সরকার ঘাটতি বাজেট অর্থায়নের জন্য দেশ অথবা বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। দেশীয় উৎস থেকে সাধারণত ট্রেজারি বিল, সরকারি বিভিন্ন মেয়াদী সিকিউরিটিজ এবং বন্ডসমূহ বিক্রি করে ঋণ নেয়া হয়। অন্যদিকে, বিদেশি ঋণ সাধারণত বিভিন্ন দাতাসংস্থা যেমন- বিশ্ব ব্যাংক, এসিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্য়াংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন অথবা বিদেশি সরকারের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়। দেশি-বিদেশি উভয়ক্ষেত্রেই সরকারকে উক্ত ঋণের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমান সুদ দিতে হয়।

অনুদান গ্রহণ

ক্ষেত্রবিশেষ সরকার ঘাটতি বাজেট অর্থায়নের জন্য বিদেশি অনুদান গ্রহণ করে থাকে। সাধারণত উন্নত দেশসমুহ অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহকে অনুদান দিয়ে থাকে। তবে, এই অনুদান শুধুমাত্র নগদ অর্থের মাধ্যমেই হয় না বরং অন্য অনেক উপায়ে হতে পারে।

পূর্ববর্তী বছরের উদ্বৃত্ত বাজেট থেকে অর্থায়ন

সরকারের আয় অপেক্ষা ব্যয় কম হলে যে উদ্বৃত্ত অর্থ থেকে যায় তা দিয়ে সরকারের পরবর্তী অর্থ বছরের বাজেটের অর্থায়ন হতে পারে। অর্থাৎ পূর্ববর্তী কোন অর্থবছরের বাজেটের যে অর্থ উদ্বৃত্ত হিসেবে ছিল সেই অর্থ ঘাটতি বাজেটে ব্যবহার করে থাকে। যদিও এই ধরনের অর্থায়ন সাধারণত দেখা যায় না। কারণ সব দেশের সরকারই বাজেটের একটা ধারা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা করে। যেমন কোন কোন দেশের সরকার ঘাটতি বাজেট দেয় বিদেশি অনুদানের ও অন্যান্য সুবিধা পাবার আশায় এবং এই ধারা অনেক বছর অব্যহত রাখে। আবার খুব কম দেশই উদ্বৃত্ত বাজেট নীতি অনুসরণ করে। যেহেতু সরকার কোন লাভজনক সংস্থা নয় তাই তার ব্যয় থেকে আয় বেশি হবার প্রয়োজন পড়ে না বরং প্রয়োজনে ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট করে থাকে।

স্থায়ী সম্পদ বিক্রয়

বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার ঘাটতি বাজেট অর্থায়নের জন্য সরকারি স্থায়ী সম্পদ বিক্রয় করতে পারে। যদিও এ ধরনের অর্থায়ন খুব একটা দেখা যায় না।

অর্থনীতির উপর রাজস্ব নীতির প্রভাব

দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপের উপর প্রভাব বিস্তারের জন্য সরকার রাজস্ব নীতির ব্যবহার করে থাকে। ফলে অর্থনীতিতে রাজস্ব নীতির গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। সরকার বিশেষ করে সামগ্রিক চাহিদাকে প্রভাবিত করে নির্দিষ্ট কিছু অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে চায়। এসব লক্ষ্যের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-

মূল্য স্থিতিশীলতা

       একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে মূল্য স্থিতিশীলতা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ নিয়ামক। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে দেশের জনগনের বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় খরচ বেড়ে যায়। কিন্তু এই সময়ে তাদের আয়ের পরিবর্তন হয় না । অর্থাৎ মানুষের হাতে খরচযোগ্য আয় একই থাকে। তখন হয় তাকে ভোগ কমাতে হবে না হয় তুলনামূলক কম মানের পণ্য ব্যবহার করতে হবে। এতে তার জীবনযাত্রার মান কমে যায়। এজন্য সব দেশের সরকারই চায় মূল্যস্তর স্থিতিশীল রাখতে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার সাধারণত সংকোচনমূলক রাজস্ব নীতি গ্রহণ করে থাকে যাতে মুদ্রাস্ফীতি অতিমাত্রায় বেড়ে না যায় এবং মূল্যস্তরও স্থিতিশীল থাকে।

সম্পূর্ণ কর্মসংস্থান 

       সরকার চায় তার দেশের সকল নাগরিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে যেটাকে অর্থনীতির ভাষায় সম্পূর্ণ বা পূর্ণ কর্মসংস্থান বলে। যদিও বাস্তবে সম্পূর্ণ কর্মসংস্থান বা ১০০ শতাংশ কর্মসংস্থান সম্ভব হয় না। তবুও প্রতিটা সরকার চায় সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেতে এবং সে অনুযায়ী রাজস্ব নীতি গ্রহণ করে থাকে।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি 

      অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধারা বৃদ্ধি এবং অব্যাহত রাখাই সরকারের গৃহীত সকল অর্থনৈতিক নীতির মুখ্য উদ্দেশ্য। অর্থাৎ দেশের অর্থনীতিতে পণ্য ও সেবার উৎপাদন বৃদ্ধি করা।

সর্বোপরি, সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রণীত মুদ্রানীতির সাথে সমন্বয় করে রাজস্ব নীতি গ্রহণ করে যাতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যগুলি অর্জন বিশেষ করে মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) বৃদ্ধির পাশাপাশি মুদ্রানীতির উদ্দেশ্য যেমন মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হার নিয়ন্ত্রণে রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধিত হয়।

মুদ্রা নীতি (Monetary Policy)

মুদ্রা নীতি হ’ল একটি অর্থনীতিতে অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি কৌশল। এটি credit নীতি হিসাবেও পরিচিত। বাংলাদেশে বাংলাদেশ ব্যাংক, ভারতে রিজার্ভ ব্যাংক অর্থনীতির অর্থ সঞ্চালনের তদারকি করে।

মুদ্রা নীতির ধরণ

 মুদ্রা নীতির দুটি ধরণ রয়েছে- প্রসারিত মুদ্রানীতি এবং সংকোচনের মুদ্রানীতি।

মুদ্রা নীতির ধরণ

প্রসারিত মুদ্রা নীতি (Expansionary monetary policy)

যে নীতির ফলে বাজারে অর্থের যোগান বৃদ্ধি পায় তাকে প্রসারিত মুদ্রা নীতি বলে। প্রসারিত মুদ্রা নীতিতে সুদের হার হ্রাস করার পাশাপাশি Cash Reserve Ratio (CRR) কমিয়ে অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয়। এর ফলে উদ্যোক্তারা নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ গ্রহণে উৎসাহিত হয় এবং পণ্য ‌ও সেবা উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাড়ে।

 সংকোচনের মুদ্রা নীতি (Monetary policy of contraction)

যে নীতির ফলে বাজারে অর্থের যোগান হ্রাস পায় তাকে সংকোচনের মুদ্রা নীতি বলে। সংকোচনের মুদ্রা নীতিতে সুদের হার বৃদ্ধি করার পাশাপাশি Cash Reserve Ratio (CRR) বাড়িয়ে অর্থ সরবরাহ হ্রাস করা হয়। এর ফলে উদ্যোক্তারা নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ গ্রহণে নিরুৎসাহিত হয় এবং পণ্য ‌ও সেবা উৎপাদন হ্রাস পায়, বেকারত্ব ও কর্মী ছাটাই বৃদ্ধি পায়। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমে।

রাজস্ব বা আর্থিক নীতি এবং মুদ্রা নীতির মধ্যে পার্থক্য

নিচে আর্থিক নীতি এবং মুদ্রানীতির মধ্যে প্রধান পার্থক্য দেখানো হল-

রাজস্ব নীতি এবং মুদ্রা নীতির মধ্যে পার্থক্য

  1. রাজস্ব বা আর্থিক নীতি হল সরকারের নীতিমালা যেখানে সরকার তার রাজস্ব আয় এবং ব্যয়ের মাধ্যমে অর্থনীতির পণ্য ও পরিষেবাদির সামগ্রিক চাহিদা এবং সরবরাহকে প্রভাবিত করে। আর যে নীতির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতির অর্থ সরবরাহ নির্ধারণ এবং নিয়ন্ত্রণ করে তা মুদ্রা নীতি হিসাবে পরিচিত।
  2. আর্থিক নীতিটি সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয় দ্বারা পরিচালিত হয় এবং মুদ্রানীতি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত হয়।
  3. আর্থিক নীতি একটি স্বল্প সময়ের জন্য তৈরি করা হয়, সাধারণত এক বছর।  যখন মুদ্রা নীতি দীর্ঘস্থায়ী হয়।
  4. আর্থিক নীতি অর্থনীতির দিকনির্দেশনা দেয়। অন্যদিকে, মুদ্রা নীতি দামের স্থিতিশীলতা নিয়ে আসে।
  5. আর্থিক নীতি সরকারী রাজস্ব এবং ব্যয়ের সাথে সম্পর্কিত। মুদ্রা নীতি ঋণ এবং আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করে।
  6. রাজস্ব নীতিমালার প্রধান উপকরণ হ’ল করের হার এবং সরকারী ব্যয়। বিপরীতে, সুদের হার এবং ক্যাশ রিজার্ভ অনুপাত মুদ্রানীতির সরঞ্জাম।
  7. রাজনৈতিক প্রভাব আছে আর্থিক নীতিতে। মুদ্রানীতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব থাকার কথা নয়।