যোগাযোগের বাধা কাকে বলে?  (What are the Barriers to Communication?)

কারিগরি ভাষায়, যোগাযোগের অবাধ প্রবাহকে বাধা দেয় এমন কিছুকে যোগাযোগের বাধা বলা হয়। অথবা এটিকে কেবল “গোলমাল” (Noise) হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে। যোগাযোগের বাধা তিনটি স্তরে ঘটতে পারে: প্রেরক (transmitter) স্তরে, মাধ্যম বা চ্যানেল (medium) স্তরে বা গ্রহীতা (receiver) স্তরে।

যোগাযোগ (Communication) হল তথ্য প্রেরণের প্রক্রিয়া। প্রেরক যে তথ্য উপস্থাপন করে, তা যদি গ্রহীতার মনে অপরিবর্তিত অবস্থায় স্থানান্তরিত হয়, আমরা বলতে পারি যে একটি নিখুঁত যোগাযোগের সংঘটিত হয়েছে। যদি আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা স্মরণ করি তাহলে আমরা মনে করতে পারি  আমরা কতবার ভুল যোগাযোগের অভিজ্ঞতা পেয়েছি (কখনও কখনও বিব্রতকর ভুল বোঝাবুঝির কারণ), আমরা বুঝতে পারব যে নিখুঁত যোগাযোগ হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে এমন কোনও জিনিস নেই।

যোগাযোগের বাধা কয়টি ও কি কি ?

যোগাযোগের বাধা প্রধানতঃ ৫ প্রকার। এগুলি নিম্নরূপ-

যোগাযোগের বাধা

যোগাযোগের ৫টি বাধা

১। মাধ্যমের ভুল পছন্দ (Wrong choice of medium)

২। বস্তুগত বাধা (Physical barriers) – গোলমাল, সময় এবং দূরত্ব, খারাপ সময়  (Noise, time and distance, Poor timing) ইত্যাদি যোগাযোগের বস্তুগত বাধা।

৩। শব্দার্থিক বাধা (Semantic barriers) – শব্দের ব্যাখ্যা, বাইপাস নির্দেশাবলী, নির্দেশ, অর্থ (Interpretation of words, Bypassed instructions, Denotation, connotations) ইত্যাদি যোগাযোগের শব্দার্থিক বা অর্থগত বাধা।

৪। বাস্তবতার বিভিন্ন উপলব্ধি (Different comprehensions of reality) – বিমূর্তকরণ, তির্যক, অনুমান করা (Abstracting, Slanting, Inferring) ইত্যাদি যোগাযোগের বাস্তবতার বিভিন্ন উপলব্ধি জনিত বাধা।

৫। সামাজিক-শারীরিক বাধা (Socio-physical barriers) – মনোভাব এবং বিকল্প, আবেগ, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, বদ্ধ মন, রেফারেন্সের ফ্রেম, স্থিতি-সচেতনতা, যোগাযোগের উৎস, অমনোযোগিতা, দ্বন্দ্বমূলক লক্ষ্য, ত্রুটিপূর্ণ সংক্রমণ, দুর্বল ধারণ, অযাচিত যোগাযোগ (Attitude and options, Emotions, Cultural diversity, Closed mind, Frame of reference, Status-consciousness, Source of communication, Inattentiveness, Conflicting goals, Faulty transmission, Poor retention, Unsolicited communication)ইত্যাদি যোগাযোগের বাস্তবতার বিভিন্ন উপলব্ধি জনিত বাধা।

 

  • শব্দার্থক (Semantic): শব্দের অর্থের সাথে সম্পর্কিত বুঝায়
  • ব্যাখ্যা (Denotation): আক্ষরিক অর্থের নির্দেশনা বুঝায়
  • ভাবার্থ (Connotation): শব্দ দ্বারা প্রস্তাবিত অনুভূতি বা ধারণা বুঝায়
  • বিমূর্তকরণ (Abstracting): অন্যগুলি বাদ দিয়ে কিছু বিবরণ নির্বাচন করা বুঝায়
  • তির্যক (Slanting): বাস্তবতাকে একটি বিশেষ পক্ষপাত দেওয়া, পক্ষপাতিত্ব, একচোখা বুঝায়
  • অনুমান করা (Inferring): উপসংহার অঙ্কন (তথ্যের সাথে বিপরীত) বুঝায়

 

মাধ্যমের ভুল পছন্দ (Wrong choice of medium)

যখনই আমরা কোন যোগাযোগ করতে চাই, আমাদের কাছে বেছে নেওয়ার মত বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া অপশন থাকে – মৌখিক, লিখিত, ভিজ্যুয়াল, অডিও-ভিজ্যুয়াল, কম্পিউটার-ভিত্তিক ইত্যাদি। এই সমস্ত মিডিয়ার প্রত্যেকের আপেক্ষিক যোগ্যতা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সঠিকভাবে নির্বাচিত মাধ্যম যোগাযোগের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে, তেমনি অনুপযুক্ত মাধ্যম কার্যকর যোগাযোগে বাধা হিসেবে কাজ করতে পারে। আসুন নিম্নলিখিত পরিস্থিতি বিবেচনা করা যাক:

  • একজন বিক্রয়কর্মীকে গত পাঁচ বছরের তুলনামূলক বিক্রয় চিত্রের উপর একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হল। যদি তিনি তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে একটি দীর্ঘ অনুচ্ছেদ লেখেন, বা ফোনে কথা বলেন, এটি কিছুতেই কার্যকর যোগাযোগ হবে না। তার একটি সারণী (Table) আকারে পরিসংখ্যানগুলি উপস্থাপন করা উচিত, বা একটি বার ডায়াগ্রাম তৈরি করা উচিত, যা যোগাযোগকে একটি কার্যকর প্রক্রিয়া করে তুলবে।
  • একজন কর্মচারী তার অসদাচরণের জন্য উর্ধতনের কাছে তার অনুশোচনা প্রকাশ করতে চায়। এই ক্ষেত্রে, উর্ধতন বরাবর লিখিত ব্যাখ্যা অকার্যকর হতে বাধ্য, মুখোমুখি যোগাযোগ সম্ভবত সেরা অপশন হবে। তাকে খুব কম কথা বলতে হবে, তিনি যে অনুতপ্ত তা অভিব্যক্তিতে প্রকাশ করতে হবে: তার তত্ত্বাবধায়ক সন্তুষ্ট হবেন এবং পুরো বিষয়টি সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে নিষ্পন্ন হবে।
  • একজন ম্যানেজার একটি বিশিষ্ট কর্মক্ষমতার জন্য একজন কর্মচারীকে প্রশংসা করতে চান। ম্যানেজার কি পিয়নকে মেমো দিয়ে পাঠাবেন? আমরা সবাই জানি মেমো সাধারণত বিরক্তিকর হয়। ম্যানেজারকে এমন একটি মাধ্যম বেছে নিতে হবে যা ব্যক্তিগত স্পর্শসহ (with a personal touch) তার প্রশংসা (compliments) প্রেরণ করবে।

প্রতিটি যোগাযোগ একটি উপযুক্ত মাধ্যমে প্রেরণ করা আবশ্যক. একটি অনুপযুক্ত মাধ্যম যোগাযোগের সবচেয়ে বড় বাধা।

যোগাযোগের বস্তুগত বাধা (Physical Barriers to Communication)

যোগাযোগের বস্তুগত বাধা প্রধানতঃ ৩ প্রকার। যেমন-

যোগাযোগের বস্তুগত বাধা

যোগাযোগের বস্তুগত বাধা

১। গোলমাল (Noise): নয়েজ প্রায়ই যোগাযোগের জন্য একটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারখানায়, মেশিনের উচ্চ শব্দে মৌখিক যোগাযোগ কঠিন হয়ে পড়ে, ব্ল্যারিং-এর মতো বৈদ্যুতিক নোটিশ প্রায়ই টেলিফোন বা লাউডস্পিকার সিস্টেমের মাধ্যমে যোগাযোগে হস্তক্ষেপ করে। যাইহোক, গোলমাল শুধু মাত্র শব্দের (sound) সাথে সম্পর্কিত নয়। ‘গোলমাল’ শব্দটি সমস্ত ধরণের বস্তগত বাধা বা হস্তক্ষেপের জন্যও ব্যবহৃত হয়; যেমন দুর্বোদ্ধ হাতের লেখা, ডুপ্লিকেট টাইপস্ক্রিপ্টের ধোঁয়াটে কপি, দুর্বল টেলিফোন সংযোগ, দুর্বল মোবাইল নেটওয়ার্ক ইত্যাদি।

২। সময় এবং দূরত্ব (Time and distance): সময় এবং দূরত্ব যোগাযোগের মসৃণ প্রবাহে বাধা হিসাবে কাজ করে। কম্পিউটার প্রযুক্তির সাথে টেলিফোনের ব্যবহার যোগাযোগকে খুব দ্রুত করেছে এবং অনেকাংশে দূরত্বের বাধা অতিক্রম করেছে। যাইহোক, কখনও কখনও যান্ত্রিক ত্রুটি এই সুবিধাগুলিকে অকার্যকর করে তোলে। এই ক্ষেত্রে, বার্তা প্রেরক এবং গ্রাহকের মধ্যে দূরত্ব একটি শক্তিশালী বাধা হয়ে ওঠে।

কিছু কারখানা শিফটে চলে। বিভিন্ন শিফটে কর্মরত ব্যক্তিদের মধ্যে এক ধরনের কমিউনিকেশন গ্যাপ থাকে। কারণ, প্রেরিত বার্তা সকলের নিকট একই সময়ে বা একইভাবে পৌঁছায় না।

কক্ষে বা কোন অধিবেশনে বসার ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা কার্যকর যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, কর্মচারীরা যে আসনই দখল করে থাকুক না কেন, তারা অবশ্যই একে অপরের সাথে চোখের যোগাযোগ (Eye contact) করতে চায়। আই কন্টাক্ট না হলে বক্তা ও শ্রোতার মধ্যে উত্তম যোগাযোগ সম্ভব হয় না।

৩। ভুল সময় (Poor timing): ভুল মুহুর্তে যোগাযোগ প্রায়শঃই কার্যকর হয় না। অসময়ে যোগাযোগের কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। বিশেষ করে, যদি একটি বার্তা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার শেষ মুহুর্তে পাঠানো হয়, এটি বিরক্তি উদ্রেক করে এবং যোগাযোগের কার্যকারিতা থাকে না।

বস্তুগত বাধাগুলি হল:

  • গোলমাল: কারখানায় মেশিনের শব্দ, টেলিকম সুবিধায় বাহ্যিক ঝামেলা, খারাপ হাতের লেখা, খারাপ ফটোকপি, অস্পষ্ট ছাপা ইত্যাদি।
  • সময় এবং দূরত্ব: যদি টেলিকম এবং নেটওয়ার্ক সুবিধা না থাকে, বিভিন্ন সিফ্টে কাজ করা লোকজন, হলের বসার ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ ইত্যাদি।
  • ভুল সময়: বিশেষ করে যদি এটি একটি সময়সীমার শেষ মুহুর্তে বা সময় ফুরিয়ে য়াওয়ার পর য়োগাযোগ করা হয়।

এই বাধাগুলি কাটিয়ে উঠতে দরকার শুধু একটু যত্ন।

যোগাযোগের শব্দার্থিক বাধা (Semantic Barriers)

যোগাযোগের শব্দার্থিক বাধা মূলতঃ ৩ প্রকারে ঘটে থাকে। যেমন-

যোগাযোগের শব্দার্থিক বাধা

যোগাযোগের শব্দার্থিক বাধা

১। শব্দের ব্যাখ্যা (Interpretation of words): বেশিরভাগ যোগাযোগ শব্দের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়, তা বলা হোক বা লিখিত হোক। কিন্তু শব্দ বিভিন্ন অর্থ প্রকাশ করতে সক্ষম। এটা খুবই সম্ভব যে প্রাপকের নিকট বার্তায় প্ররিত শব্দের অর্থ এবং প্রেরকের অভিপ্রেত অর্থ একি হবে না। এর ফলে ভুল যোগাযোগ হতে পারে।

মারফি এবং পেক (Murphy and Peck) তাদের ইফেক্টিভ বিজনেস কমিউনিকেশনস বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে, একটি সংক্ষিপ্ত অভিধানে, ছোট শব্দ ‘run’-এর ৭১টি ক্রিয়াপদ, ৩৫টি বিশেষ্য এবং বিশেষণ হিসেবে আরও ৪টি অর্থ রয়েছে।

যদি ‘run’ শব্দটি কোনও বার্তায় ব্যবহার করা হয়, তবে প্রেরকের ১১০টি অর্থের যে কোনও একটি বুঝানোর স্বাধীনতা রযেছে, অনুরূপভাবে প্রাপকেরও ১১০টি অর্থের যে কোনও একটি দ্বারা এটি ব্যাখ্যা করার স্বাধীনতা রয়েছে। একই সময়ে প্রেরক ও প্রাপক শব্দটির একই অর্থ উপলব্ধি করবে এমন নিশ্চয়তা আছে কি?

যদি যোগাযোগটি নিখুঁত হতে হয় তবে প্রাপককে অবশ্যই প্রেরকের মনের মতো একই অর্থ উপলব্ধি করতে হবে।

২। পাশকাটানো নির্দেশাবলী (Bypassed instructions): বাইপাস করা হয়েছে বলা হয় যদি একটি বার্তার প্রেরক এবং প্রাপক একই শব্দের বিভিন্ন অর্থের বৈশিষ্ট্য বা একই অর্থের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে। মারফি এবং পেক কীভাবে বাইপাস নির্দেশাবলী যোগাযোগ প্রক্রিয়ার সাথে চলতে পারে তার একটি ক্লাসিক উদাহরণ দিয়েছেন।

একটি চিঠি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় একজন অফিস ম্যানেজার একটি অতিরিক্ত অনুলিপি করে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি একজন নতুন সহকারীকে নির্দেশ সহ  চিঠিটি দিলেন, “এটি আমাদের স্টকরুমে নিয়ে যান এবং বার্ন করুন”। অফিস ম্যানেজারের মনে (এবং ফার্মের পরিভাষায়) ‘বার্ন’ শব্দের অর্থ কোম্পানির একটি তাপ প্রক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত মেশিনে একটি অনুলিপি তৈরি করা।

যাইহোক, বিভ্রান্ত নতুন কর্মচারী প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে ভয় পেয়ে চিঠিটি স্টোর রুমে নিয়ে গেলেন এবং, একটি ম্যাচ কাঠি জ্বালিয়ে চিঠিটি পুড়িয়ে ফেললেন এবং এইভাবে একমাত্র বিদ্যমান চিঠিটি ধ্বংস হল।

৩। আক্ষরিক অর্থ এবং ভাবার্থ (Denotation and connotation): শব্দের দুই প্রকারের অর্থ রয়েছে: আক্ষরিক অর্থ এবং ভাবার্থ।

কোনো শব্দের আভিধানিক অর্থকে বলা হয় নিদর্শনমূলক অর্থ বা আক্ষরিক অর্থ। এটি কোনো ইতিবাচক বা নেতিবাচক গুণাবলী নির্দেশ না করেই বস্তুর নাম দেয়। ‘টেবিল’, ‘বই’, ‘মিটিং’-এর মতো শব্দগুলি নির্দেশক।

বিপরীতে, ভাবার্থ গুণগত বিচার এবং ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া জাগিয়ে তোলে। ‘সৎ’, ‘দক্ষ’, ‘সস্তা’, ‘আন্তরিক’ ইত্যাদি ভাবার্থবোধক শব্দ।

‘সৎ’, ‘উচ্চরিত্র’, ‘আন্তরিক’-এর মতো কিছু শব্দের অনুকূল অর্থ রয়েছে, ‘কাপুরুষ’, ‘ধীরে’, ‘অক্ষম’-এর মতো শব্দের প্রতিকূল অর্থ রয়েছে। কিন্তু ভাষায় প্রচুর পরিমাণে ঝামেলাপূর্ণ শব্দ রয়েছে যেগুলির নির্দিষ্ট প্রসঙ্গে অনুকূল অর্থ এবং অন্য প্রসঙ্গে প্রতিকূল অর্থ রয়েছে। এরকম একটি শব্দ হল ‘সস্তা’। নিম্নলিখিত বাক্য দুটি দেখুন:

তারা আমাদের সস্তা জিনিস দিয়েছে।

এই দোকানে সস্তায় জিনিস বিক্রি করে।

প্রথম বাক্যে ‘সস্তা’ গুণমানকে বোঝায় এবং এর একটি প্রতিকূল অর্থ রয়েছে, দ্বিতীয় বাক্যে এটি দামকে বোঝায় এবং এটি অনুকূলভাবে ব্যবহার করা হয়।

‘ফ্যাট চেক’, ‘ফ্রি এন্টারপ্রাইজ’, ‘বিশাল লাভ’ ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কারণ, শব্দের ভাবার্থবোধক অর্থের কারণে তা কম্লিমেন্ট হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে; আবার তা শাব্দিক অর্থে কখনও কখনও গ্রহণকারীর নিকট অপমান হিসাবে অনুভূত হতে পারে।

সারাংশ

বাইপাস নির্দেশাবলী এবং শব্দের অর্থবোধক অর্থ থেকে উদ্ভূত সমস্যাগুলি এড়াতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি সর্বদা মনে রাখা উচিত:

  • আপনি যে ব্যাখ্যা দিতে চান তার মধ্যে প্রাপকের কাছে পরিচিত শব্দগুলিকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
  • যদি আপনি চান যে প্রাপক আপনার বার্তার প্রেক্ষাপটে একটি পরিচিত শব্দের একটি অপরিচিত অর্থ প্রদান করুক, আপনাকে প্রথমবার এটি ব্যবহার করার সময় এটিকে যথেষ্ট পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
  • যদি আপনি মনে করেন যে আপনার দ্বারা ব্যবহৃত একটি শব্দ প্রাপকের কাছে অপরিচিত হতে পারে, তাহলে প্রথমবার ব্যবহার করার সময় আপনার উচিত এর অর্থ স্পষ্ট করা।
  • যখনই সম্ভব, নেতিবাচক অর্থের পরিবর্তে ইতিবাচক শব্দগুলি বেছে নেওয়া উচিত।

শব্দার্থিক বাধা ঘটতে পারে যদি

  • প্রেরক এবং প্রাপক একই শব্দের বিভিন্ন অর্থ নির্ধারণ করে বা একই অর্থের জন্য বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে, বা
  • শব্দগুলি প্রেরক এবং প্রাপকের নিকট বিভিন্ন সূক্ষ্মতা, ছায়া বা স্বাদ বহন করে।

শব্দার্থিক বাধা কমাতে, আমাদের উচিত

  • পরিচিত শব্দ ব্যবহার করা,
  • ছায়া বা সূক্ষ্মতা স্পষ্ট করা, এবং
  • যতদূর সম্ভব, ইতিবাচক অর্থ সহ শব্দ ব্যবহার করা।

কথিত আছে যে হেনরি কিসিঞ্জার তার বক্তৃতায় এমন শব্দ ব্যবহার করতেন শ্রোতারা যার ৭টি অর্থ দ্বারা বিভ্রান্ত হতেন। এভাবে তিনি ধূম্রজাল সৃষ্টি করতেন যাতে তার প্রতিপক্ষ বিভ্রান্ত হতে বাধ্য। এবং পরবর্তীতে তিনি তার সুবিধাজনক অর্থ আরোপ করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেন। শব্দের অস্পষ্টতা ছিল তার চাতুর্যের হাতিয়ার।