“শেয়ার বাজার?”
এটি তো জুয়া খেলা ছাড়া আর কিছুই নয়! বরং আইনত বৈধ জুয়া খেলা! আন্দাজের উপর একটি কোম্পানির শেয়ার কিনে নিন। যদি শেয়ারের দাম বেড়ে যায়, তাহলে আপনি জিতে গেলেন! নিমিষের মধ্যে বড়োলোক হয়ে গেলেন! দাম কমে গেলে সর্বস্ব হারালেন!
অধিকাংশ মানুষের কাছে শেয়ার বাজার অনেকটা এরকমই। এমনকি অধিকাংশ নতুন বিনিয়োগকারীও এমন ধারণা নিয়েই শেয়ার বাজারে প্রবেশ করেন। অনেকে মনে করেন, শেয়ার বাজার হল এমন একটি প্লাটফর্ম, যা আপনাকে প্রচুর মুনাফা এনে দিবে, নয়ত সর্বস্ব কেড়ে নিবে। কিন্তু বাস্তবে কি তাই?
একদমই না!
তাহলে কি? আসুন জেনে নেয়া যাক- শেয়ার কি? শেয়ার কত প্রকার ও কি কি? শেয়ার বাজার কি? শেয়ার কেনা বেচার বিবেচ্য বিষয় কি কি?
শেয়ার এবং শেয়ার বাজার সম্পর্কে জানার আগে শেয়ারের উৎপত্তি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেয়া দরকার। আর সেজন্য প্রাইভেট লিমিটেড ও পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বিষয়টি প্রাসঙ্গিকভাবে এসে যায়।
Table of Contents
প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি কাকে বলে?
আমি একটি ব্যবসা শুরু করতে অথবা আমার চলমান ব্যবসার সম্প্রসারণ করতে চাই। পরিকল্পনা করতে গিয়ে দেখলাম যে পূজিঁ লাগে তার সবটা আমার নাই। আমি এজন্য এক বা একাধিক অংশীদার বা পার্টনার নিলাম। অর্থাৎ একটা কোম্পানি খুললাম।
যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা ন্যূনতম ২ এবং সর্বোচ্চ ৫০ জনে সীমাবদ্ধ, শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং আইন অনুযায়ী জনগণের উদ্দেশ্যে শেয়ার বিক্রয়ের আহ্বান জানাতে পারে না তাকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলে। মনে রাখবেন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা ২ এবং সর্বোচ্চ ৫০।
এখান থেকে আমরা জানলাম যে, আমাদের আলোচ্য শেয়ার বাজারে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার ক্রয় বিক্রয় হয় না।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি কাকে বলে?
যে কোম্পানি মূলধন সংগ্রহ করার জন্য শেয়ার বাজারে শেয়ার বিক্রি করতে পারে এবং যার মালিকানা কোন একক ব্যক্তির না তাকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বলে। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা ৭ এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা শেয়ার সংখ্যা দ্বারা নির্দিষ্ট।
শেয়ার সংখ্যা দ্বারা নির্দিষ্ট বলতে কি বুঝায়? পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির অনুমোদিত মূলধনকে সমান অংশে ভাগ করা হয় এবং এর প্রতিটি ভাগকে এক একটি শেয়ার বলা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সমস্ত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির এক একটি শেয়ারের ফেস ভেলু বা লিখিত মূল্য ১০ টাকা। কোন কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন যদি ২ কোটি টাকা হয় তবে ঐ কোম্পানির শেয়ার সংখা হবে ২কোটি ভাগ ১০ সমান ২০ লক্ষ। এই ২০ লক্ষ শেয়ারই কিন্তু মার্কেটে জনগণের মাঝে বিক্রয়যোগ্য নয়।
কোম্পানির উদ্যোক্তাদের প্রত্যেকের সর্বনিম্ন পরিমান শেয়ার থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উদ্যোক্তারা সর্বনিম্ন পরিমান শেয়ার তাদের হাতে রেখে কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকি নিতে চায় না। আবার নিজেদের হাতে বেশি শেয়ার রেখে কম শেয়ার বিক্রি করলে বাজার থেকে কাঙ্খিত পূঁজি সংগ্রহ হবে না। তাই তারা এই দুয়ের সমন্বয় করে শেয়ার মার্কেটে পাবলিক শেয়ার বিক্রি করে।
সরকারি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি:
কোনো কোম্পানির মালিকানা বা এর শেয়ার মালিকানার কমপক্ষে ৫১% বা এর বেশি যদি সরকারি মালিকানায় থাকে এবং এর পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সরকারের হাতে থাকে, তবে তাকে সরকারি মালিকানায় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বলে।
বেসরকারি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিঃ
কোনো কোম্পানির শেয়ারের কিয়দংশ সরকার গ্রহণ করলে তাকে আধা সরকারি কোম্পানি বলে। কোনো কোনো সময় সরকার শেয়ার মূলধনের শতকরা ৩০% বা ৪০% গ্রহণ করে। এতে সরকারি ও বেসরকারি মালিকানার সংমিশ্রণ ঘটে বলে একে আধা সরকারি কোম্পানি বলে।
শেয়ার কি?
‘শেয়ার’ হল একটি কোম্পানির মালিকানার অংশীদারিত্ব। যখন আপনি কোনো কোম্পানির একটি শেয়ার কিনলেন, তখন আপনি মূলত ঐ কোম্পানির সম্পত্তি ও আয়ের ভাগীদার হলেন। অর্থাৎ আপনি ঐ কোম্পানির মালিকানার ক্ষুদ্র একটি অংশ কিনে নিয়েছেন। কোম্পানির মালিকানায় যা কিছু আছে তা হল ‘কোম্পানির সম্পত্তি’; যেমন, যন্ত্রপাতি, বিল্ডিং, জমিজমা ইত্যাদি, আর ‘কোম্পানির আয়’ হল অর্থ, যা কোম্পানি পণ্য বিক্রির মাধ্যমে অর্জন করে।
কোম্পানি জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রি করে কেন?
একটি কোম্পানির সম্প্রসারণ বা নতুন ইউনিট খোলা ও উন্নয়নের জন্য মূলধন ও অর্থ প্রয়োজন। কোম্পানি মূলধন বৃদ্ধির জন্য জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রি করে থাকে। শেয়ার বাজারে কোম্পানির শেয়ারগুলি ইস্যু করার প্রক্রিয়াকে ইনিশিয়াল পাবলিক অফার (আইপিও) বলা হয়।
বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট কি?
শেয়ার বাজারে প্রবেশের চাবি কাঠি হল বিও (BO) একাউন্ট বা বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট। স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর অনুমোদিত বহু এজেন্ট রয়েছে, এগুলো ব্রোকারেজ হাউস নামে পরিচিত। এসব হাউসে বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে তারাই বিও অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন। বিও অ্যাকাউন্ট অনেকটা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মতই।
অ্যাকাউন্টকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, নমিনির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি অথবা পাসপোর্টের ফটোকপির সঙ্গে ব্রোকারেজ হাউসের নির্ধারিত ফি জমা দিলেই আপনি দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আপনার বিও অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং গ্রাহক পরিচিতি নম্বর পেয়ে যাবেন। গ্রাহক পরিচিতি নম্বর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেয়ার লেনদেন বা কেনা বেচা করতে পারবেন। তবে আপনি যে ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে বিও খুলেছেন সেই হাউসের মাধ্যমেই লেনদেন করতে হবে।
শেয়ার কত প্রকার ও কি কি
বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে ২ ধরনের পাবলিক শেয়ার কিনতে পাওয়া যায় ।
এক. প্রাইমারি শেয়ারের মাধ্যমে এবং
দুই. সেকেন্ডারি শেয়ারের মাধ্যমে।
প্রাইমারি শেয়ারঃ
কোন কোম্পানি প্রথম প্রাইমারি শেয়ারের মাধ্যমে শেয়ার বাজারে প্রবেশ করে। অর্থাৎ নতুন কোন কোম্পানিকে বাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে তাকে প্রথমে প্রাইমারি শেয়ার ছাড়তে হবে। প্রাইমারি শেয়ারের একটি ফেস ভেলু বা লিখিত মূল্য থাকে যা অনুমোদিত মূলধের একক অংশ। কোম্পানি তাদের পরিচালিত ব্যবসায়ের লাভ, সুনাম, মূলধনী সম্পদের বৃদ্ধি, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, সুনাম ইত্যাদি বিবেচনা করে আরও কিছু পরিমান মূল্য (প্রিমিয়াম) ফেস ভেলুর সাথে যুক্ত করে প্রতিটি শেয়ারের দাম নির্ধারণ করে। এসইসি (সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন) অনুমোদন দিলে কোম্পানি তাদের শেয়ার কেনার জন্য জনগণের কাছে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আহ্বান জানায়। একে বলে ইনিশিয়াল পাবলিক অফার (IPO)।
আগ্রহী জনগণ নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে শেয়ার কেনার জন্য আবেদন করে। আবেদনের জন্য BO Account খোলা লাগে।
ইস্যুকৃত শেয়ার অপেক্ষা আবেদন বেশি হলে লটারির মাধ্যমে বিজয়ীদেরকে শেয়ার ইস্যু করা হয়। বাকিদের টাকা ফেরত দেয়া হয়।
সেকেন্ডারি শেয়ারঃ
প্রাইমারি শেয়ার হোল্ডারগণ যখন তাদের শেয়ার বাজারে (শেয়ার বাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জ) বিক্রি করতে যায় তখন তাকে সেকেন্ডারি শেয়ার বলে। সেকেন্ডারি শেয়ারের মূল্য নির্দিষ্ট থাকে না। তা প্রতিনিয়ত উঠা নামা করে চাহিদা ও সরবরাহের উপর।
এছাড়াও আরো কয়েক প্রকারের শেয়ার আছে। যেমন – বোনাস শেয়ার, রাইট শেয়ার ইত্যাদি।
বোনাস শেয়ারঃ
কোম্পানি সারা বছর ব্যবসা করে যে লাভ করে তা শেয়ার হোল্ডারদের মাঝে শেয়ার অনুপাতে বিতরণ করে দেয়, কিন্তু সব কোম্পানি লাভের সমুদয় অংশ নগদ বিতরণ করে না। কোম্পানি তার লাভের একটা অংশ নগদ বিতরণ করে, বাকিটা ব্যবসায়ের পূঁজি হিসাবে পুনঃবিনিয়োগ করে। বিনিময়ে শেয়ার হল্ডারদেরকে তাদের প্রাপ্য বাকি লভ্যাংশের সমপরিমান শেয়ার দিয়ে দেয়। একে বলে বোনাস শেয়ার। এই বোনাস শেয়ার শেয়ার হোল্ডারদের পোর্ট ফোলিওতে যোগ হয় এবং এই শেয়ার সেকেন্ডারি শেয়ারের মতই কেনা বেচা হয়।
রাইট শেয়ারঃ
বাজারে শেয়ার আছে এরূপ কোম্পানি তাদের পেইড আপ ক্যাপিটাল বৃদ্ধির জন্য নতুন শেয়ার ওপেন মার্কেটে IPO না ছেড়ে যখন শুধু মাত্র বিদ্যমান শেয়ার হোল্ডারদের মাঝে প্রিমিয়ামসহ অফার ইস্যু করে তখন তাকে অধিকার শেয়ার বা রাইট শেয়ার বলে। কোম্পানির কাছ থেকে সরাসরি এই শেয়ার কেনার অধিকার শুধু মাত্র বিদ্যমান শেয়ার হোল্ডারদের থাকে বলে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। রাইট শেয়ারও শেয়ার হোল্ডারদের একাউন্টে জমা হবার পর যে কোন সময় সেকেন্ডারি শেয়ারের মত কেনা বেচা হয়।
ব্রোকার দিয়ে শেয়ার কিভাবে কেনে?
শেয়ার ব্যবসা করতে হলে প্রথমেই কোন একটি ব্রোকার হাউসে গিয়ে BO Account খুলতে হবে। BO Account খুললে ঐ ব্রোকার হাউস থেকে একটা ব্রোকার নম্বর ও BO Account নাম্বার দিবে। BO Account নাম্বার লাগে প্রাইমারি শেয়ার কেনার জন্য। একাউন্ট খোলার পর ঐ ব্রোকারে ক্যাশ বা চেকে টাকা জমা দিলে তা একাউন্ট হল্ডারের পোর্ট ফলিওতে জমা হবে। এবার এই টাকা দিয়ে শেয়ার কেনা যাবে। শেয়ার কিনলে ব্যালান্স থেকে টাকা বিয়োগ হবে এবং ক্রয়কৃত শেয়ার পোর্ট ফোলিওতে জমা হবে।
অনুরূপভাবে শেয়ার বিক্রি করলে টাকা একাউন্টে জমা হবে এবং ফোলিও থেকে বিক্রিত শেয়ার বিয়োগ হবে। প্রতিটি কেনা বেচায় ব্রোকার হাউস তাদের কমিশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে রাখবে। শেয়ার হোল্ডার প্রয়োজনে তার একাউন্ট থেকে ব্রোকার হাউসের মাধ্যমে টাকা তুলে নিতে পারবেন। এটি নগদ তোলা যায় না; একাউন্ট হোল্ডারের ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার হয়। এই একাউন্ট নাম্বার ব্রোকার নাম্বার খোলার সময় আগেই দিয়ে রাখতে হয়।
শেয়ার বাজার
সাধারণ অর্থে যেখানে শেয়ার কেনা বেচা হয় তাকে শেয়ার বাজার বলে। এখান থেকে বিও অ্যাকাউন্টধারী যে কেউ শেয়ার কেনা বেচা করতে পারেন। শেয়ার বাজারে শেয়ারকে একটি পণ্য হিসেবে মনে করা হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি দৃশ্যমান কোনো বস্তু নয়। শুধু টাকার বিনিময়ে মালিকানা পরিবর্তনের দৃশ্যই চোখে পড়ে। শেয়ার কেনা বেচার জন্য বাংলাদেশে দুটি বাজার আছে। একটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, অপরটি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।
আবার এই দুটি বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রয়েছে একটি সংস্থা, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা এসইসি। এসইসির কাজ হলো শেয়ার বাজার পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ; প্রয়োজনে আইন প্রণয়ন, সংশোধন, পরিমার্জন; বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসহ অনিয়ম প্রতিরোধ ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
স্টক এক্সচেঞ্জে সরাসরি শেয়ার কেনাবেচা হয় না। এদের রয়েছে অনুমোদিত বহু এজেন্ট যা ব্রোকারেজ হাউস নামে পরিচিত। এই ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মাধ্যমে শেয়ার কেনা বেচা হয়।
শেয়ার কিনে কিভাবে লাভ আসে?
কোম্পানির লভ্যাংশঃ
প্রাইমারি, সেকেন্ডারি, বোনাস বা রাইট শেয়ার যেভাবেই আপনি শেয়ারের মালিক হোন না কেন আপনি আপনার পজেশনে থাকা শেয়ারের অনুপাতে ঐ কোম্পানির মালিকানার অংশীদার। কোম্পানি লাভ করলে আপনি আনুপাতিক হারে লভ্যাংশ পাবেন – সেটা হতে পারে নগদ অর্থ অথবা বোনাস শেয়ার অথবা নগদ ও বোনাস শেয়ার উভয় প্রকারে।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ২০২০ সালে স্কয়ার ফার্মা কোম্পানি লভ্যাংশ হিসাবে তার শেয়ার হোল্ডারদেরকে ৪৭% নগদ ও ৫% বোনাস শেয়ার প্রদান করেছে। স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের ফেস ভেলু ১০ টাকা। একজন শেয়ার হোল্ডারের ১০০টি শেয়ার থাকলে তার হিসাবে নগদ জমা হয়েছে (১০০x১০x৪৭%) =৪৭০ টাকা এবং বোনাস শেয়ার হিসাবে তিনি পেয়েছেন ৫টি শেয়ার। এখন তিনি ১০৫ টি শেয়ারের মালিক।
শেয়ার কেনা বেচা করে আয়ঃ
শেয়ার বাজার কখনো স্থির থাকে না। কেউ যদি কোন শেয়ার কেনার কিছুদিন পরে বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন তবে তার থেকে তিনি লাভবান হবেন। তবে কেনা এবং বেচার ক্ষেত্রে হিসেবি হতে হবে এবং অবশ্যই শেয়ার বাজার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কোন পূর্ব ধারনা না নিয়ে হঠাৎ করে শেয়ার বাজারে নেমে পড়লে পূঁজিসহ ডুবে মরার সমুহ সম্ভাবনা রয়ে গেছে।
শেয়ার বাজারের কতকগুলি বিবেচ্য বিষয়
শেয়ার মার্কেটে একটি কোম্পানির অনেক বিষয় খেয়াল রেখে শেয়ার কেনা বেচা করতে হয়। যেমন-
P/E Ratio বা প্রাইচ আরনিং রেশিও বা মুল্য আয় অনুপাত
একটি শেয়ারের বর্তমান বাজার মূল্য যদি ১০ টাকা হয় এবং বাৎসরিক আয় যদি শেয়ার প্রতি ২ টাকা হয় তবে ঐ শেয়ারের P/E Ratio হবে (১০/ ২)= ৫। এর তাৎপর্য হল আপনি শেয়ারটি এখন কিনে রেখে দিলে আপনার বিনিয়োগের সমপরিমান লাভ উঠতে ৫ বছর সময় লাগবে। যারা নিয়মিত শেয়ার কেনা বেচা না করে দীর্ঘকালের জন্য শেয়ার কিনে রাখতে চান তারা অবশ্যই P/E Ratio কম এমন শেয়ার কিনবেন।
Earnings Per Share বা শেয়ার প্রতি আয়
একটি কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা মনে করি ১০০০০০ এবং বাৎরিক আয় ৩০০০০০ টাকা, তাহলে তার শেয়ার প্রতি আয় (৩০০০০০/ ১০০০০০) = ৩ টাকা। আবার ধরি অন্য একটি কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ৫০০০০০ এবং বাৎরিক আয় ১৫০০০০০ টাকা, তাহলে তার শেয়ার প্রতি আয় (১৫০০০০০/ ৫০০০০০) = ৩ টাকা। এখানে উভয় ক্ষেত্রে শেয়ার প্রতি আয় ৩ টাকা। কিন্তু উভয় শেয়ারের বাজার দাম সমান না হলে তাদের মেরিট কিন্তু এক নয়। সে ক্ষেত্রে P/E Ratio বিবেচনা করে শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কোম্পানির প্রতিদিনের শেয়ার ক্রয় বিক্রয়ের আকারঃ
একটি কোম্পানির প্রতিদিনের শেয়ার ক্রয় বিক্রয়ের আকার দেখে তার ভবিষ্যৎ দাম ওঠা নামার পূর্বাভাস অনুমান করা য়ায়।
বিগত ৫২ সপ্তাহের দামের পরিধিঃ
এখানে শেয়ারটির বিগত ৫২ সপ্তাহের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দাম দেখা যায়। বর্তমান দাম যদি সর্বনিম্ন দামের কাছাকাছি থাকে তাহলে শেয়ারটি কিনে অপেক্ষা করলে একসময় সর্বোচ্চ দাম পাওয়ার আশা করা যায়। কিন্তু সর্বোচ্চ দামের কাছাকাছি সময়ে কিনলে আর খুব বেশি দামের আশা করা যায় না। তখন অল্প সময়ের মধ্যে অল্প লাভে অথবা কেনা দামে অথবা দাম কমতে থাকলে অল্প লোকশান দিয়েও বিক্রি করে দিতে হয়। নতুবা বড় ধরণের দর পতনে পুঁজি হারানোর আশংকা থাকে।
চিত্রে দেখা যাচ্ছে, শেয়ারটির আজকের দাম তার বিগত ৫২ সপ্তাহের দামের পরিধির সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে। এ সময়ে এই শেয়ারটি না বিক্রি করে বরং কিনে রাখা নিশ্চিত লাভের নির্দেশ করে।
ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবধানঃ
যারা নিয়মিত শেয়ার কেনা বেচা করেন তাদের সব সময় বিবেচনায় রাখতে হবে যে ক্রয় বিক্রয় উভয় ক্ষেত্রে ব্রোকার হাউসকে কমিশন দিতে হয়। কোন ব্রোকার হাউসের কমিশন যদি 0.৫% হয় তবে ক্রয় মূল্যের থেকে ১% এর বেশি মূল্য়ে বিক্রয় করতে না পারলে লাভ থাকবে না।
সমস্ত পুঁজি একই শেয়ারে বিনিয়োগ না করাঃ
সমস্ত পুঁজি একই শেয়ারে বিনিয়োগ করা সব চেয়ে বোকামি এবং সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। কোন কারণে ঐ শেয়ারটির দর পতন ঘটলে অপূরণীয় ক্ষতি। ভিন্ন ভিন্ন শেয়ারে বিনিয়োগ করলে একটিতে লোকশান হলেও অপরগুলির লাভ দিয়ে তা পুষিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে।
মোট বিনিয়োগের ২৫% টাকা একাউন্টে নগদ রাখাঃ
মনে করেন আপনার বিনিয়োগের সব টাকা দিয়ে আপনি শেয়ার কিনে ফেললেন। এক সময় দেখলেন আপনার কেনা এক বা একাধিক শেয়ারের দাম অনেক কমে গেছে। তখন আপনার চেয়ে চেয়ে দেখা আর আফসোস করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। এই দাম কমার সুযোগ আপনি কাজে লাগাতে পারবেন না। কিন্তু আপনার একাউন্টে টাকা থাকলে আপনি কম দামে শেয়ার কিনে আপনার পূর্বের কেনা শেয়ারের গড় দাম কমিয়ে আনতে পারতেন।
উদাহরণ- আপনি ১০০ টাকা দরে ৫০০ শেয়ার কিনেছেন। শেয়ারটির দাম কমে ৬০ টাকায় নেমে এসেছে। তখন আপনি আরো ২০০ শেয়ার কিনলেন। এবার আপনার ৭০০ শেয়ারের গড় দাম পড়ল (১০০ X ৫00 + ৬০ X ২০০) /৭০০ = ৮৮.৫৭ টাকা। আবার এই শেয়ারের দাম যখন ১০০ টাকায় উঠবে তখন বিক্রি করলেও আপনার ৮ হাজার টাকা লাভ থাকবে। কিন্তু আপনি ২য় দফায় টাকার অভাবে কিনতে না পারলে দীর্ঘদিন টেনশনে থেকে দাম ওঠার পরে ১০০ টকা দামে বিক্রি করেও আপনার কোন লাভ থাকত না।
** শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলে জিডিপি বৃদ্ধি পায়।
Thank you sir….
Thank you Sujon for being with me
Great writing 😊…..
Thank you very much.
Best wishes.
Thank you very much
Thank you
খুব উপকারি কনটেন্ট যারা নতুন নতুন শেয়ার বাজারে প্রবেশ করতে চান তাদের জন্য। ধন্যবাদ
Thank you for your nice comment.
অনেক হেল্প ফুল ছিল। ধন্যবাদ 🙂।
Thank you
Many many thanks
ঊহু কি?
ঊহু কে ঋণপত্র কেন বুঝায়?????
“ঊহু” এর অন্যকোন প্রতি শব্দ থাকলে অনুগ্রহ করে বলুন।
Please write the term in English
Thankful